
১০০ শয্যা বিশিষ্ট শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে তিনজন ডেঙ্গু রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে।
এর মধ্যে একজন শিশু, একজন তরুণী ও একজন বৃদ্ধা। তারা হলেন, শরীয়তপুর সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদারের মেয়ে সাথী আক্তার (১৯), শৌলপাড়া কোয়ারপুর গ্রামের ইকবাল খানের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৮) ও নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের কাইচকুড়ি গ্রামের মতিন ছৈয়ালের স্ত্রী শাহিনুর বেগম (৫৫)।
সাথী ও শহিদুলকে বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শাহিনুর বেগমকে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় ভর্তি করা হয়েছে। সাথী এবার শরীয়তপুর সরকারী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে। শহিদুল শৌলপাড়া ফুলকুড়ি কিন্ডারগার্টেনের প্রথম শ্রেনীর ছাত্র।
হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে তিনজন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন শিশু ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আজ (বুধবার) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল ও হাসপাতাল প্রাঙ্গনে বিশেষ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে হাসপাতালে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এখানে সার্বক্ষনিক আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন এবং তারা হাসপাতালে আগত রোগীদের ডেঙ্গু বিষয়ে কাউন্সেলিং করবেন। তাছাড়া ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য আমরা আইসোলুশন ওয়ার্ড স্থাপন করেছি। সেখানে ডেঙ্গু রোগীদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছি। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার সব ধরণের অষুধ আমরা প্রস্তুত রেখেছি। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় কিট সংগ্রহ করেছি। হাসপাতালে রোগী আসলে কোন সমস্যায় পড়বে না। এ ব্যাপারে আমরা সচেতন আছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত সকল চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সম্মিলিতভাবে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। আশা করছি ঢাকার মতো শরীয়তপুরে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করবে না।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, বর্তমানে সারাদেশে ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬০টি জেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগ। আমরা সদর হাসপাতালে তিনজন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করেছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় উপায় হলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও মশার উৎপাদন ব্যহত করা। সেজন্য আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা আসছে, আমাদের যার যার অফিস আদালত ও বাড়ির আঙ্গিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং স্বচ্ছ পানি যেন একাধারে তিনদিন না থাকে সে ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। এডিস মশার উৎপাদন যদি আমরা ব্যহত করতে পারি তাহলেই ডেঙ্গু আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। যেসকল ডেঙ্গু রোগী আমাদের হাসপাতালে আসবে তাদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ে কেউ আতংকিত হবেন না।