
সরকারী খাল অবৈধভাবে দখল করে বাঁধ দিয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে অনুমতি ছাড়াই চররোসুন্ধি গ্রামের খাল অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করছেন জেলা যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম তালুকদার(৪০)। সে চররোসুন্ধি গ্রামের হাজী আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সরকারি ওই খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় স্থানীয় কৃষকদের শুকনা মৌসুমে প্রায় ৩০০-৪০০ একর জমিতে আলু চাষ এবং স্বাভাবিক বর্ষা মৌসুমে পাট জাগ দিতে দারুন অসুবিধার শিকার হচ্ছেন।
ভুক্তভোগি এলাকাবাসী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার চররোসুন্ধি গ্রামের তালুকদারের ব্রীজ হইতে সরকারি খাল ও হালটের প্রায় ৩০০ ফুট পর্যন্ত দখল করিয়া ভেকু মেশিন দ্বারা মাটি খনন করিয়া মৎস্য খামার তৈরী করিয়াছে। যা ১০৪ নং চররোসুন্ধি মৌজার ১৬০৫ নং খতিয়ানে ৭৮৭ নং দাগ, ১৬৮৬ নং খতিয়ানে ৭৮৮নং দাগ, ৪১০ নং খতিয়ানে ৭৯০, ৭৯১ ও ৭৯২ নং দাগ এবং ১৬০৯ নং খতিয়ানে ৭৮৮ নং দাগভুক্ত। উক্ত খালের মুখ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় স্থানীয় কৃষকরা পড়েছে বিপাকে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সেখানে স্থানীয় পাট চাষীরা সহজেই তাদের উৎপাদিত পাট জাগ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করে আসছিল। কিন্তু এবার বর্ষা আসার আগেই জেলা যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম তালুকদার সেই খালে মাছ চাষ করার জন্য মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়। এতে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পাট জাগ দিতে না পারায় ও শুকনা মৌসুমে কিভাবে আলু চাষ করতে গিয়ে পানি সেচ দিবেন এজন্য চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এলাকাবাসী এই খালে বাঁধ দিতে বাধা দিতে গেলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। এ জন্য খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে মো: ফজলুল হক পেদা উপজেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী মিজানুর রহমান ঢালী, কাইয়ুম ঢালী, আব্দুল কাদের ঢালী ও আজিবুর তালুকদার বলেন, আমাদের খাল যখন উন্মুক্ত ছিল তখন আমরা বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে মালামাল বহন করে নিয়ে যেতে পারতাম, স্বাভাবিক বর্ষায় পাট কেটে জাগ দিতে পারতাম, শুকনা মৌসুমে আমাদের ৩০০-৪০০ একর জমিত আলু চাষ হয়, এখানে সরকারি খালে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করায় আর আলু চাষ করতে পারবো না। আমাদের প্রশাসনের নিকট দাবি সরকারি খাল উন্মুক্ত করে দেওয়া হোউক। যাতে কৃষকদের কৃষি চাষে কোন ধরনের অসুবিধা না হয়।
এ ব্যাপরে যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম তালুকদারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাহাবুর রহমান শেখ জানান, ওই খালে মাছ চাষ করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউ যদি অবৈধভাবে খাল দখল করে মাছ চাষ করে তা হলে তদন্ত করে স্থানীয়দের দেওয়া অভিযোগের সত্যতা মিললে অচিরেই খালটি জনসাধারনের স্বার্থে উন্মুক্ত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।