
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১৮ নং দক্ষিন মহিষার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফা খানম (লতা) এর বিরুদ্ধে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) সহ শিক্ষার্থী অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন শিক্ষা অফিসে নানা অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ করেন।
২৬ জুলাই সকাল ১০ টা থেকে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আল আমিন হাওলাদার ও গোলাম মোস্তফা মিয়া। সংবাদ পেয়ে ৫ শতাধিক লোকজন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। এই সময় অভিযোগকারী ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করেন তদন্ত কর্মকর্তাগণ।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক লুৎফা খানম লতা এসএমসি সদস্য ও ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামানকে প্রকাশ্যে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করাসহ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য মূলক আচরণ ও শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন করে থাকেন। প্রধান শিক্ষকের নির্যাতন সইতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে গেছে। রেশারেশির কারণে উপরের ক্লাশে অনেক শিক্ষার্থীদের না উঠিয়ে অভিভাবকদের প্রতি প্রতিশোধ নেয়া, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার নাম করে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা, চাঁদা দিতে অপারগ পরিবারের সন্তানদের প্রতিযোগিতা থেকে বঞ্চিত করা এবং প্রতিবাদ করলে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানী করেন এই প্রধান শিক্ষক। অনেক অভিভাবকদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করার হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ রাখা এই প্রধান শিক্ষকের নিয়মিত কাজ। ইতোমধ্যে তিনি সহকারী শিক্ষক আলপনাকে বেঞ্চের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে তিনি ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিমাংশা করেন। নিজের কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের পড়তে বাধ্য করেন তিনি। তাছাড়া তিনি নিজে সমাজে অনৈতিক কাজ করেন এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতো চলাফেরা করেন তিনি। এই সকল অভিযোগের বিষয়েই আজ তদন্ত হয়েছে। তদন্তকালে দূর্ণিতীবাজ প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিলও করেন বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।
অভিযোগকারীরা জানায়, এই প্রধান শিক্ষকের কাছে আমাদের সন্তান নিরাপদ না। সে নিজেই সমাজের একটা ভাইরাস। তার কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা ভাল কিছুই শিখতে পারবে না। এই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে থাকলে আমাদের সন্তানদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাব।
তদন্তকালে এসএমসি সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন মোড়ল, এসএমসির অন্যান্য সদস্য ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগকারীদের একেএকে ডেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন তদন্ত কর্মকর্তাগণ।
প্রধান শিক্ষক লুৎফা খানম লতা বলেন, এই বিদ্যালয়ে ২২৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সকল শিক্ষার্থীর প্রতি সমান নজর রাখি। বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ চলছে। কাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ হলে কিছু লোকের যাতায়ত বন্ধ হয়ে যাবে। বিদ্যালয়ের মাঠ দিয়ে এলাকাবাসী রাস্তা নিতে চায়। আমাকে সেই আবেদনে স্বাক্ষর করতে বলে। আমি সেই আবেদনে স্বক্ষর করিনাই বলেই আজ এলাকাবাসী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
তদন্ত কর্মকর্তাগণ জানায়, অভিযোগের বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে তদন্ত করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সমন্বয়ে মিটিং করে একটা সমাধানের ব্যবস্থা করব।