
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, জিয়া বন্দুকের নলের মুখে পেছনের দরজা দিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল। বিচারপতি সায়েমকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য করে। বিএনপি কখনো সুষ্ঠ ভোটে ক্ষমতায় আসে নাই। তারা নির্বাচন আতঙ্কে ভোগে। নির্বাচন এলেই তারা আবোল তাবল বলতে থাকে। নির্বাচন আসলে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জনগণের কাছে না গিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলে, বিএনপি নির্বাচনে এলে আওয়ামীলীগ ৩০টি আসনও পাবে না, আর নেত্রী খালেদা জিয়াও এমন উদ্ভট কথাবার্তা বলেছিল। বিএনপি নামক গণবিচ্ছিন দলটি জনরোসে এখন বিলুপ্তির পথে। তাদের এদেশের মানুষ ভালো করেই জানে। তারা ঈদের পরে চাঁদের পরে আমাবস্যার পরে পূর্ণিমার পরে কত আন্দোলনের হুংকার দিয়ে গর্তে ঢুকে যায়।
আর নির্বাচনে কত জোট করে জোটবদ্ধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নে বিশ্বাসী। তারা আর গণধিকৃত বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নত শরীয়তপুরের শিক্ষার্থীদের সংগঠন “কৃতিনাশা” আয়োজিত ইফতার মাহফিলপূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনামুল হক শামীম বলেন, জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে রাজাকার ও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের পুনর্বাসন করে, এমনকি রাষ্ট্রের উচ্চপদে আসীন করে। অনেক দেশপ্রেমিক, মুক্তিযোদ্ধা, ও সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য জিয়াউর রহমান অভিনব ‘হ্যা’ ও ‘না’ ভোট করে শতকরা ১০০ থেকে ১২০ ভাগ ভোট পাওয়া দেখায়। যে নির্বাচনে জিয়া একাই প্রার্থী ছিল। নিজেই বিচারকদের আদালতের রায় লিখে দিত। অনেক মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দিয়েছে। দেশে হত্যা-গুম ও খুনের রাজনীতি চালু করে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাক্ষাৎকারই প্রমাণ করে জিয়াই বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড।
উপমন্ত্রী শামীম বলেন, জিয়াই প্রথম এ দেশের ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। জিয়ার শাসনামলে এমন কোনো অপকর্ম নেই সে করেনি। ওই সময় দেশে হত্যা, গুম, ধর্ষণ বেড়ে গিয়েছিল। দেশের সব প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছিল। ক্ষমতায় থাকতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশের সম্পদ লুটেপুটে খেয়েছে, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করেছে, বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। আর ক্ষমতায় না থাকতে পেরে দেশকে অস্থিতিশীল করতে আগুন সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে। তাই দেশের মানুষ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বিএনপি এখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে নামসর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছে। আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে তারা দেশ-বিদেশে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বিএনপি জানে, তারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে না। তারা তো জানেই খালেদা ও তারেক রহমান নির্বাচনের অযোগ্য; তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাই তারা মাঝেমধ্যেই নতুন ফর্মুলা নিয়ে হাজির হয়। ক্ষমতায় আসতে হলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিদেশী প্রভুদের কাছে ধরনা দিয়ে লাভ নেই। আর আন্দোলনের দোহাই দিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ রাজপথে থেকেই সব আন্দোলন করবে। দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতির কারণেই আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে সারা বাংলাদেশের ন্যায় শরীয়তপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মাসেতুর পর মেঘনা সেতু নির্মানের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ চলছে। ভাঙন কবলিত নড়িয়ার পদ্মার পার এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। শরীয়তপুরে শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন হয়েছে। শরীয়তপুরে ফোন লেন হচ্ছে। পদ্মার দূর্গম চর নওপাড়া, চরআত্রা, কাঁচিকাটা ও কুন্ডের চরে সাবমেরিন ক্যাবল ও রিভার ক্রসিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। শরীয়তপুরের কৃষিপণ্য (সবজি) এখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা তিন সংসদ সদস্য (এনামুল হক শামীম, ইকবাল হোসেন অপু ও নাহিম রাজ্জাক) শরীয়তপুরকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে চলছি। এসব সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্য। তাই এদেশের জনগণ আবারও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা আনবে। এজন্য ছাত্রসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
সংগঠন সভাপতি মো. তাহমিদুর রহমান সিহাবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় খোরশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া,আর্থ এন্ড এনভায়েরনমেন্টাল সাইন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান, শরীয়তপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী জামিল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল প্রমূখ।