
শরীয়তপুরে ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলায় ফ্রিতে যে কোন দেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (পুলিশ ছাড়পত্র) করা হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। কেউ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে মাত্র ১২ মিনিটেই পেয়ে যাচ্ছেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের মাঠে তিন দিনব্যাপী ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার ২য় দিন শুক্রবার সকালে শরীয়তপুর পুলিশ বিভাগ স্টলে গেলে দেখা যায় এ সেবা।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে মেলার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন শরীয়তপুর। সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে একযোগে এ উন্নয়ন মেলা উদ্বোধন করেন। উন্নয়ন মেলা চলবে ৪ থেকে ৬ অক্টোবর প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
মেলায় শরীয়তপুর পুলিশ বিভাগ ৫৫ ও ৫৬ নম্বর স্টলে অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হেল্প ডেক্সসহ হারানো ও প্রাপ্তি, তাৎক্ষনিক অভিযোগ গ্রহন ও আইনী সেবা প্রদান এবং নারী ও শিশু হেল্প ডেক্স এ সেবা দেয়া হচ্ছে।
মেলায় শরীয়তপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এএসআই মো. জাকির হোসেন জানান, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের আবেদন করার জন্য কি কি কাগজ লাগবে।
১. ৫০০ টাকার জমার রশিদ (সোনালী ব্যাংক শাখা), ২. পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি, ৩. ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা জন্ম সনদ, ৪. চেয়ারম্যান/মেয়র সনদ পত্র, ৫. ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি সংযুক্ত করতে হবে।
উপরোক্ত এগুলো মেলার স্টলে জমা দিলে মাত্র ১২ মিনিটেই অনলাইনের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (পুলিশ ছাড়পত্র) প্রদান করা হবে।
এএসআই মো. জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে কোন দেশে যেতে হলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (পুলিশ ছাড়পত্র) প্রয়োজন হয়। আর সেই ছাড়পত্র ফ্রিতে অনলাইনের মাধ্যমে করে দিচ্ছি আমরা। তাছাড়া নিজেরাও অনলাইনের মাধ্যমে করতে পারে। তার নিয়ম শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে এই স্টলে। এ সেবা চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
এএসআই বলেন, অন্য কোন যায়গায় অনলাইনের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে হলে টাকা লাগে। আমরা ফ্রিতে করে দিচ্ছি।
এছাড়া স্টলে নারী ও শিশু হেল্প ডেক্সের দায়িত্বে রয়েছেন এসআই রানু আক্তার তিনি জানান, নারী ও শিশুদের নিয়ে শরীয়তপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নিচ তলায় ‘শরীয়তপুর উইমেন সাপোর্ট সেন্টার’ নামে একটি সেন্টার খোলা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত শরীয়তপুর উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে ৫৮৫টি নারী নির্যাতন, পারিবারিক কলহ, যৌন নিপিড়ন ও যৌতুকের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। এরমধ্যে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত পরিবারকে নিয়ে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে ৫১৮টি অভিযোগ সমাধান করেছে উইমেন সাপোর্ট সেন্টার। বাকি ৬৭টি অভিযোগ সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এসব কাজের জন্য গত ২৯ মার্চ বাংলাদেশ পুলিশ হেড কোয়ার্টারে বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে শরীয়তপুর উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই রানু আক্তারকে বিশেষ সম্মাননা তুলে দেয়া হয়।
এসআই রানু আক্তার বলেন, ‘আমরা এখন সবাই সচেতন, আর হবে না নারী ও শিশু নির্যাতন’ এই শ্লোাগানকে নিয়েই আমরা কাজ করি। ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলায় আমাদের স্টলে এসে এ সেবা পাবে যে কোন নারী ও শিশুরা ।
শরীয়তপুর পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন বলেন, ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলায় আমাদের স্টল রয়েছে। স্টলে অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হেল্প ডেক্সসহ হারানো ও প্রাপ্তি, তাৎক্ষনিক অভিযোগ গ্রহন ও আইনী সেবা প্রদান এবং নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন একদল পুলিশ। আমরা চাই প্রতিটি মানুষ তাদের প্রাপ্তি পুলিশের কাছ থেকে পাক।