
৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি চিকিৎসক না থাকায় প্রসূতি মায়েরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া মঞ্জুরীকৃত ১৮টি পদের মধ্যে কনসালট্যান্টের ৬টি পদই শুন্য রয়েছে হাসপাতালটিতে। এর মধ্যে ২ জন ডেপুটেশনে, একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ও একজন যোগদানের পর আর না আসায় বর্তমানে ৬ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
২০১৫ সালের ৩ এপ্রিল ৩০ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে হ্যান্ডওভার করা হয়। এরপর ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেতে পাঁচ বছর লেগে যায়।
২০১৯ সানের ২২ আগষ্ট ডা. শেখ মোস্তফা খোকন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর তার প্রচেষ্টায় ২০২০ সালের নভেম্বরে এসে হাসপাতালটি ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পায়। এরপর পর থেকে শুরু হয় ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম। পাল্টে যেতে থাকে হাসপাতালটির পরিবেশ। চিকিৎক, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেনীর জনবল ও আল্টাসনোগ্রাম মেশিন ছাড়া উল্লেখযোগ্য কিছুর অভাব নেই হাসপাতালটিতে। ডা. শেখ মোস্তফা খোকন যোগদানের পর হাসপাতালটিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। হাসপাতালটির ইনডোর আউটডোরসহ পুরো হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়। হাসপাতাল চত্ত্বরে দৃষ্টিনন্দন ফুল ও ঔষধী গাছের বাগান করা হয়েছে। কনফারেন্স রুমটি আধুনিক চেয়ারটেবিল দ্বারা সাজানো হয়েছে। জরুরী বিভাগ সহ হাসপাতালটির ভিতর ও বাহির পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস রোগীদের জন্য ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখন শুধুমাত্র চিকিৎসক ও জনবলের পদগুলো পূরন করা হলে সঠিক চিকিৎসাসেবা পাবে বলে মনে করেন ডামুড্যাবাসী।
ডা. শেখ মোস্তফা খোকন বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর দেখতে পেলাম ৩০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা হিসেবে হ্যান্ডওভারের দর্ঘদিন পরও হাসপাতসলটি ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পায়নি। তখন আমি সিভিল সার্জন স্যারের মাধ্যমে ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেতে চেষ্টা তদবির করতে থাকি। অবশেষে ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়ে যাই। মঞ্জুরীকৃত ১৮ টি পদের মধ্যে বর্তমানে আমি সহ মোট ৬ জন চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছি। জুনিয়র কনসালট্যান্ট এর সবগুলো পদই শূন্য রয়েছে। এখানে প্রচুর প্রসূতি মায়েরা চিকিৎসা নিতে আসেন। আমরা তাদের নরমাল ডেলিভারী চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকি। গাইনী চিকিৎসক ও এনেস্থেসিয়া পদ পূরন করা হলে এখানে সিজারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর জনবল সংকট রয়েছে হাসপাতালটিতে। দুইজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে পুরো হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন। তারপরেও আমরা পুরো হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। পর্যাপ্ত গ্যাস, লেবুলাইজার, ইসিজি ও ডিজিটাল এক্সরে মেশিন রয়েছে। শীঘ্রই আল্টাসোগ্রাম মেশিন এসে যাবে। হাসপাতালটির পাশে নার্সিং ইনস্টিটিউট ভবন নির্মানাধীন রয়েছে। ভবিষ্যতে ডামুড্যাতে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক উন্নয়ন হবে আশা করা যায়।