শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের উত্তর ডুবুলদিয়া এলাকায় এক ড্রেজার ব্যবসায়ী অধিক লাভবান হতে গিয়ে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে বলে ওই এলাকার কৃষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চার পাশের প্রায় ১০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ধান-পাট সহ প্রায় ১০ বিঘা ফসলি জমি গভীর অতলে ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতিকার চেয়ে এক কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ মাটি উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও লিখিত অভিযোগ থেকে জানাগেছে, টিটু আকন নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ী একই এলাকার খালেক টেপার কাছ থেকে জমি বদল করে ও আইয়ুব আলী খালাসীর কাছ থেকে জমি ক্রয় করে প্রায় আড়াই বিঘা জমির উপর ড্রেজার বসিয়েছে।
অধিক লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন লোকের কাছে মাটি বিক্রি করে আসছে টিটু আকন। ড্রেজার দিয়ে মাটি উঠিয়ে বিক্রি করায় ফসলি জমির মাঝখানে গভীর কূপের সৃষ্ঠি হচ্ছে। এতে কূপের চারদিকের সুরুজ আকন, খালেক টেপা, গোলাম কবির আকন ও তোফাজ্জল শেখের ফসলি জমির আংশিক কূপের ভিতর ধ্বশে পড়ছে। মাটি উত্তোলন বন্ধ না হলে কূপের চার পাশের সকল ফসলি জমি কূপের মধ্যে ধ্বশে পড়ে কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকগণ।
ফসলি জমি রক্ষার্থে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পক্ষে মান্নান আকন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর এক লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ করা হলেও স্থায়ী কোন সমাধান পায়নি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবারগুলো।
গভীর কূপের পূর্ব পাড়ের কৃষক আলী একাব্বর খালাসী জানায়, সে আবুল কালাম আকনের কাছ থেকে জমি লিজ (কট খাজনা) নিয়ে কৃষি কাজ করে যাচ্ছে। পার্শ্ববর্তী জমিতে ড্রেজার বসিয়ে গভীর থেকে মাটি তোলায় তার লিজী জমি ফসলসহ ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন বন্ধ না করলে সে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং জমির মালিক জমি হারাবে।
কূপের পশ্বিম পাশের কৃষক গোলাম কবির আকন জানায়, তার ফসল সহ ফসলি জমি কূপের গভীরে ভেঙ্গে পড়া শুরু হয়েছে। ড্রেজার বন্ধ না করলে তার সমুদয় জমি গভীর কূপে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি এলাকার মুরব্বিদের জানানো হয়েছে। ড্রেজার মালিক টিটু আকন তার জমি কিনে নিবে বলে আশ্বস্ত করেছে। গোলাম কিবরিয়ার জমি বিক্রি করার কোন দরকার হয় না। তবুও জমি ভেঙ্গে পড়ার ভয়ে বিক্রি করতে রাজি হয় সে। টিটু এখন আর জমি কিনতে চায় না। টিটু যদি জমি না কিনে তাহলে ড্রেজার বন্ধ করুক। তাহলে আমাদের ফসলি জমি রক্ষা পাবে।
ড্রেজার মালিক টিটু আকন বলেন, আমার নিজস্ব জমিতে ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলন করছি। পাশবর্তী জমি যাতে রক্ষা হয় সেজন্য আমার জমি থেকে একটা বড় অংশ বাদ দিয়ে রেখেছি। তার পরেও যদি কারো জমি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয় তাহলে বর্তমান বাজার মূলের চেয়ে অধিক মূল্য পরিশোধ করে তার জমি কিনে নিব বলে আশ্বস্ত করেছি। এখও কারো জমি ভেঙ্গে পড়েনি। একটা পক্ষ পারিবারিক দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ নিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমি কারো ক্ষতি করে পুকুর করছি না। কারো ক্ষতি করার ইচ্ছাও আমার নাই। প্রশাসনের নির্দেশে বর্তমানে ড্রেজিং কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহেলা রহমতউল্ল্যাহ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। ফসলী জমি ক্ষতিহলে ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।