
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টার দিকে বিকেনগর ইউনিয়নের বড় কৃষ্ণনগর হাওলাদার কান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, জজিরা উপজেললার বড় কৃষ্ণনগর মৌজার ২৮৩০ ও ২৬৪৩ নং দাগে ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলী খন্দকারের ছেলে দাদন খন্দকার ওই সম্পত্তিতে বসত করে ভোগ দখলে রয়েছেন।
এই জমি নিয়ে দাদন খন্দকারের সাথে একই এলাকার মৃত হাকিম খন্দকারের ছেলে ইলিয়াস খন্দকার, শাহীন খন্দকার ও সাহাবুদ্দিন খন্দকার গংদের বিরোধ চলে আসছে।
এ নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিশ দরবার করা এবং থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন খানেই বিষয়টি মিমাংসা করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল শনিবার সকাল ৭টার দিকে ইলিয়াছ খন্দকার, শাহীন খন্দকার ও সাহাবুদ্দিন খন্দকার লোকজন নিয়ে দাদল খন্দকারের বসত বাড়িতে হামলা, মারধর, ভাংচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় হামলাকারীরা দাদন খন্দকার, তার স্ত্রী অমলা বেগম ও ছেলে অনিক মিয়াকে মারধর, ৫ লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার, বিদেশ যাওয়ার কাগজপত্র ও দলিখপত্র লুটপাট করেছে বলে দাদন খন্দকারের অভিযোগ।
খবর পেয়ে জাজিরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দাদন খন্দকার বলেন, আজিজ খন্দকার ও রশিদ খন্দকার ছিলেন আপন ভাই। আমার দাদা ছিলেন আজিজ খন্দার আর ইলিয়াছ, শাহীন ও সাহাবুদ্দিনের দাদা ছিলেন রশিদ খন্দকার।
এই সম্পত্তি আমার দাদা আজিজ খন্দকার ও রশিদ খন্দাকার এয়াজ বদল করেন। এরপর থেকে দীর্ঘদিন যাবত আমার বাবা ইদ্রিস আলী খন্দকার এবং বাবা মারা যাওয়ার পর আমি এই সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছি। এয়াজ বদলের সময় কোন লিখিত দলিলপত্র না থাকলেও পরবর্তীদের ওই সম্পত্তি আমাদের নামে রেকর্ড হয়।
বর্তমানে রশিদ খন্দকারের নাতি ইলিয়াস খন্দকার, শাহীন খন্দকার ও সাহাবুদ্দিন খন্দকার আমার দখলীয় পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার জন্য লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
এছাড়া আমার স্ত্রী ও ছেলেসহ আমাদের মারধর করেছে। তারা নগদ ৫ লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার, ছেলের বিদেশ যাওয়ার কাগজপত্র ও দলিলপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আমি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। আমি কোর্টে গিয়ে মামলা করবো। সাহাবুদ্দিন খন্দার অভিযোগ বলেন, এই জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব থানায় একাধিকবার দরবার সালিশ হয়েছে। কিন্তু দাদন খন্দকার মুরব্বীদের কোন সিদ্ধান্ত মানে না। এরপর থানায় অভিযোগ করা হলে দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়। কিন্তু দাদন খন্দকার থানায় যায়নি। সালিশদের হুকুমে আমরা আমাদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছি। দাদন খন্দকার হামলা, মারধর ও লুপটারের যে অভিযোগ করেছে সেটা সম্পূর্ন মিথ্যা। আমাদের হয়রানীর করার জন্য সে এই অভিযোগ করেছে।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলায়েত হোসেন বলেন, দাদন খন্দকারের সাথে তার আপন বোন ও শ্যালকদের জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ বিষয়ে কিছুদিন আগে দাদন খন্দকারের প্রতিপক্ষ থানায় একটি অভিযোগ করেন।
পরে দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হলে দাদন খন্দকার আসেনি। পরবর্তীতে আবার ডাকা হলে দাদন খন্দকার এসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ছেলে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তরিঘরি করে চলে যায়।
পরে আজকে শনিবার সকাল ৭ টার দিকে দাদন খন্দকার ফোন দিয়ে জানায় যে প্রতিপক্ষ তার বাড়িঘর ভাংচুর করছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিত স্বাভাগিক করে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।