শুক্রবার, ৯ই জুন, ২০২৩ ইং, ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
শুক্রবার, ৯ই জুন, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুর মেম্বারের সন্তান ও পুত্রবধুর নামে ভিজিএফ চাল!

শরীয়তপুর মেম্বারের সন্তান ও পুত্রবধুর নামে ভিজিএফ চাল!

শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মালেক সরদার নিজের মেয়ে, পুত্রবধু ও কাল্পনিক নাম ব্যবহার করে ভিজিএফ এর চাল আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিন গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের দাবী পুত্রবধু ও মেয়ে অসহায় রয়েছে তাই ভিজিএফ কার্ড দিয়ে তাদের সহায়তা করা হয়েছে।

জানা গেছে, রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মালেক সরদার ১৫টি ভিজিএফ চালের কার্ড পেয়েছে। গত জুলাই মাসে তিনি সেই চাল বিতরণ করেছেন। চাল বিতরণের মাস্টার রোলের ২০৮ নম্বর ক্রমিকে দেখা যায় সেলিনা আক্তার, ২১১ নম্বর ক্রমিকে রোজিনা, ২২২ নম্বর ক্রমিকে মোসা: জিয়াসমিন আক্তার ও ২৩৮ নম্বর ক্রমিকে মর্জিনা বেগমের নাম। সেলিনা আক্তার ইউপি সদস্য মালেক সরদারের পুত্র বিল্লাল সরদারের স্ত্রী। বিল্লাল সরদার সৌদি প্রবাসী আর তার স্ত্রী সেলিনা শরীয়তপুর পৌরসভার কাশাভোগ এলাকায় বসবাস করেন। ইউপি সদস্যের মেয়ে জিয়াসমিন আক্তারের একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে বিয়ে হয়েছে। সে স্বামী সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন।

ওই ওয়ার্ডে রোজিনা নামে কোন ব্যক্তির সন্ধান মিলে নাই। মর্জিনা বেগম স্বামী আজিজুল ফকির নামে এক ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে সেই আজিজুল ফকির একজন ঠিকাদার। সে একজন ধন্যাট্য ব্যক্তি এবং সে মোটর সাইকেলে চলে। ওই ব্যক্তি সরকারি সহায়তা পাওয়ার উপযোগী না বলে জানা গেছে। তাদের কেউই চাল গ্রহন করেনা আর মাস্টার রোলে তাদের কারোর আঙ্গুলের ছাপও নাই। তাদের কেউ এই চাল উত্তোলনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে কখনো আসেনি বলেও জানায় পরিষদের দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশের সদস্যরা। ভূয়া টিপসহি দিয়ে চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি সদস্য মালেক সরদার।

এই বিষয়ে মালেক সরদার বলেন, এলাকার একটি হত্যা মামলার আসামী হয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাই মেয়ে ও পুত্রবধুর নামে দুইটি ভিজিএফ কার্ড রেখে অবশিষ্ট কার্ড এলাকার গরীব অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করেছি। ছেলে সৌদি প্রবাসী আর তার স্ত্রী-সন্তান পৌরসভার আংগারিয়া এলাকায় থাকে ও মেয়ে তার স্বামী সহ ঢাকায় থাকে।

রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঢালী সহ একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, চেয়ারম্যান হোক বা মেম্বার, কোন জনপ্রতিনিধি স্ত্রী-সন্তান বা পুত্রবধুর নামে ভিজিএফ কার্ড দেওয়ার কোন বিধান নেই।

এই বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, কোন ইউপি চেয়ারম্যান বা সদস্য ভিজিএফ এর চাল তার সন্তান-পুত্রবধু, স্ত্রী ও নিকট আত্মীয়ের নামে রাখতে পারবে না। এই চাল গরীব অসহায় মানুষের জন্য। এমন ঘটনা কোথাও ঘটে থাকলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


error: Content is protected !!