
শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের হরিণা (আলুর বাজার) ও চাঁদপুর ঘাটে ফেরীচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
মনোহর বাজার থেকে আলুর বাজার পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার কারনে দূরপাল্লার যানবাহন না আসায় ফেরীচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত গাড়ি না থাকায় ওই ঘাটে থাকা চারটি ফেরীর মধ্য থেকে তিনটি ফেরী অন্যত্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আর যত্রিবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই রুটে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারন।
বিআইডাব্লিউটিসি ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এক বছর পূর্বেও শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার যাত্রীবাহী ও মালামালবাহী যানবাহন পূর্বাঞ্চলের চাদপুর, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করতো। চাঁদপুর-হরিনা (আলুর বাজার) ফেরীঘাট দিয়ে সহ¯্রাধিক ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের যানবাহন পারাপার হতো। এমভি কেতকী, এমভি কস্তুরী সহ মোট ৪টি ফেরী দিনরাত গাড়ি পারাপারে ব্যস্ত থাকতো। প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করতো বিআইডাব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
গত বছর থেকে এ মহাসড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল কমতে থাকে। বর্তমানে সড়কের মনহর বাজার থেকে আলুর বাজার পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার জুড়ে নির্মাণ কাজ চলায় এ সড়কে গাড়ি চরাচল প্রায় বন্ধের পথে।
সাবধানতা অবলম্বন ও দূর্ঘটনা এড়াতে এ সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিকপক্ষ। পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত যানবাহ না থাকায় আলুর বাজার ঘাটের ৪টি ফেরী থেকে ৩টি ফেরী সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে এ ঘাট থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। যা বছরে প্রায় ২১ কোটি টাকারও বেশী।
এ অবস্থায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই রুটে যাতায়াতকারী সাধারণ যাত্রীদের।
শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরিঘাট টার্মিণাল সহকারী মোঃ ফারুক ইসলাম বলেন, এ রুটে দেশের বৃহত্তর চারটি বিভাগের যাত্রীবাহী ও পন্যবাহী যানবাহন চলাচল করতো। যানবাহন পারাপারে ৪টি ফেরি ব্যবহৃত হতো।
প্রায় চার মাস যাবত শরীয়তপুরের মনোহর বাজার এলাকা থেকে আলুর বাজার ফেরিঘাট পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই এ সড়কে কোন যানবাহন আসে না। গাড়ি সল্পতার কারণে ৩টি ফেরি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখন একটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হয়।
দিনে একবার যাতায়াত করি তাতেও তেমন কোন যানবাহন হয় না। অনেক সময় খালি ফেরি নিয়ে যেতে হয়। যখন ৪টি ফেরি চলতো তখন প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হতো। এখন একটি ফেরি চলে যার জ্বালানী খরচও উঠেনা। এ কারণে প্রতিদিন সরকার ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য ৩টি প্যাকেজের মাধ্যমে দ্রুত কাজ চলছে। আশা করি আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। খুব শীঘ্রই সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে। এবার যে পদ্ধতিতে সড়কের কাজ করা হচ্ছে তাতে ৪/৫ বছর যানবাহন চলাচল করতে পারবে। স্থায়ী ভাবে সমাধান করতে হলে সড়কটি পুনঃনির্মাণ প্রয়োজন। এজন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।