
প্রথমবারের মত শরীয়তপুর জেলায় একটি প্রত্যন্ত গ্রামে ব্যক্তিমালিকানায় হতে যাচ্ছে বিমানবন্দর। শুধু তাই নয় এই বিমানবন্দরকে ঘিরে প্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় রয়েছে একটি হেলিকপ্টার প্রশিক্ষণ স্কুল। যেখানে দেশ বিদেশের শিক্ষার্থীরা হেলিকপ্টার চালানোর ট্রেনিং নিতে পারবে। ফলে ওই অঞ্চলের যেমন আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হবে তেমনি দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি অন্যতম কারিগর হিসাবে কাজ করবে।
এমন একটি অসাধারণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, সফল ব্যবসা উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক সিকদার গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার। যার পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে এমন একটি প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
শরীয়তপুরের মধুপুর গ্রামাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় তৈরি হওয়া এই বিমানবন্দর সম্পর্কে জয়নুল হক সিকদার বলেন, ‘একসময় এই এই গ্রামে কোনো পাকা পথ ঘাট ছিল না রিকশা ভ্যান চলত। বর্ষার দিনে মানুষকে জুতা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে চলছে হতো। পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হতো কাদামাখা দীর্ঘ পথ। আজ সেখানে বিমানবন্দর হবে, ভাবা যায়না। তবুও এটিই সত্য’।
জানা গেছে, বিমানবন্দরটি নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষ। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সঙ্গে এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন দাফতরিক আনুষ্ঠানিকতা চলছে। সব মিলিয়ে এখন কেবল চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
পাইভেট বিমানবন্দর ও হেলিকপ্টার ট্রেনিং স্কুল প্রসঙ্গে জয়নুল হক শিকদার বলেন, অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে এই ধরনের প্রশিক্ষণ সুযোগ অনেক কম। কাউকে এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে হলে দেশের বাইরে যেতে হয়। সে কারণেই এমন একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ স্কুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই রানওয়ের ওপর কংক্রিট ফেলার কাজ শুরু করবেন। প্রকল্পের ডিজাইন অনুসারে বর্তমান অবকাঠামোতে ড্যাস-৮ কিংবা জেট আকৃতির উড়োজাহাজ ওঠানাম করতে পারবে।
বিমানবন্দরটির বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে হেলিকপ্টার ট্রেনিং স্কুল টি। পুরো প্রকল্পের জন্য প্রায় ৮৪ হাজার বর্গমিটার জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এখানে কেবল বাংলাদেশীরাই নয় বিদেশী শিক্ষার্থীরাও অংশ নিতে পারবে। ছয়টি মডেলের ১২টি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিদিনই চাপ বাড়ছে। বাড়ছে ট্রাফিক সমস্যাও। আর সে কারণে ঢাকার অদূরে একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা নিজেকে দক্ষ পাইলট হিসাবে গড়ে তুলতে পারবে।
তা ছাড়া বিমান বাহিনী ছাড়া বাংলাদেশ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে হেলিকপ্টার প্রশিক্ষণের জন্য এখন পর্যন্ত কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। ফলে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে পারছে না কেউ। এ কারণেই সিকাদার গ্রুপের চেয়ারম্যান এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন নিয়েছেন বলে জানা গেছে।