‘সঞ্চয় সপ্তাহ-২০১৯ উদযাপন ও উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম’ উপলক্ষে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২৩ ফেব্রুয়ারী থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসুচি।
এ উপলক্ষে শরীয়তপুর জেলা সঞ্চয় অফিসের উদ্যোগে শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহেরের নেতৃত্বে সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা সঞ্চয়/ব্যুরো অফিসে গিয়ে শেষ হয়। সঞ্চয় সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য “সঞ্চয় সমৃদ্ধির সোপান।”
র্যালী পূর্ব সঞ্চয় সপ্তাহের উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, ছোট ছোট বালু কণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল। অর্থাৎ ছোট ছোট বিন্দু কনা থেকেই মহাদেশ, মহাসাগরের সৃষ্টি হয়। তেমনি ছোট ছোট সঞ্চয় এক সময় বড় অংকে পরিণত হয়। আমরা যদি সঞ্চয়ে মনোনিবেশ করি তাহলে এক সময় এই সঞ্চয় আমাদের বিপদের বন্ধু হয়ে পাশে দাড়াবে। এমনি করে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সঞ্চয় যখন হবে তখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন সঞ্চয় বহুগুনে বেড়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সঞ্চয়ের মডেল হচ্ছে মৌমাছি। মৌমাছি ফুল থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মধু সংগ্রহ কের অনেক মধুতে পরিণত করে। তেমনি মানুষ যদি সংকল্পবদ্ধ হয় যে আমি সঞ্চয় করবো, তাহলে এই সঞ্চয়ই তার পরিবারকে স্বচ্ছল রাখবে, বিপদের দিনে পাশে দাড়াবে। সরকার চায় বাংলাদেশের মানুষ সঞ্চয়ী হবে। অভ্যন্তরীন সঞ্চয় ভান্ডারকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করবে। তাহলেই আমরা একদিন স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ পাবো।
জেলা সঞ্চয়/ব্যুরো অফিসের সহকারী পরিচালক নাছরিন আক্তার, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিপ্তরের ট্রেড প্রশিক্ষক মো. ইলিয়াছ হোসেন সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও বিভিন্ন শ্রেনীপেশার সঞ্চয়ী ও বিনিয়োগকারী নারী-পুরুষ র্যালিতে অংশ নেন।
র্যালী শেষে জেলা সঞ্চয়/ব্যুরো অফিসে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জেলা সঞ্চয়/ব্যুরো অফিসের সহকারী পরিচালক নাছরিন আক্তার বলেন, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতাধীন জেলা সঞ্চয় অফিস শরীয়তপুর এমনি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান, যেখানে বিনিয়োগ শতভাগ নিশ্চিন্তে থাকবে। যেহেতু এটা সরকারী প্রতিষ্ঠান সেহেতু অফিস কোথাও চলে যাবে, বিনিয়োগ অনিশ্চয়তায় থাকবে এরকম কোন সম্ভাবনা নেই। শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে জেলা সঞ্চয় অফিস শরীয়তপুরে বা বাংলাদেশে অবস্থিত যে কোন সঞ্চয় অফিসে বিনিয়োগ করতে পারেন। জাতীয় সঞ্চয় অফিস মুনাফা দিচ্ছে প্রতিটি স্কিমের ক্ষেত্রে ১১ শতাংশের উপরে। যেটা অন্য যে কোন সরকারী বা বেসরকারী ব্যাংক বা অন্য কোন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের থেকে দ্বিগুন, কোন ক্ষেত্রে দিগুনের চেয়ে বেশি। সরকারের মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে, ভাসমান ও ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি যারা ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ তাদেরকে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা এবং বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা।
নাছরিন আক্তার আরও বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার বর্ণাঢ্য র্যালীর মাধ্যমে আমরা সঞ্চয় সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন শুরু করেছি, এটা চলবে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত। ২৪ ফেব্রুয়ারী (আজ) সরকারী বেসরকারী অফিসে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম, ২৫ ফেব্রুয়ারী পেশাজীবীদের মাঝে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম, ২৬ ফেব্রুয়ারী কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম, ২৭ ফেব্রুয়ারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম, ২৮ ফেব্রুয়ারী উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম ও ১ মার্চ সপ্তাহব্যাপী সঞ্চয় সপ্তাহের মূল্যায়ন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।