শনিবার, ১০ই জুন, ২০২৩ ইং, ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
শনিবার, ১০ই জুন, ২০২৩ ইং

গোসাইরহাট এক মাদ্রাসার দু’টি নাম, মহিউসসুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসা দুই শতাধিক শিক্ষার্থী

গোসাইরহাট এক মাদ্রাসার দু’টি নাম, মহিউসসুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসা দুই শতাধিক শিক্ষার্থী

গোসাইরহাটে মাদ্রাসার গেট দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে গরিবেরচর মহিউসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা। ভিতরে প্রবেশ করলেই এই মাদ্রাসার একটি ভবনের সামনে টাঙানো আছে একই মাদ্রাসার অন্য একটি নাম মহিউসসুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসা। তাদের দাবি এটি একটি শাখা। অথচ মহিউস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা রমজান মাস উপলক্ষে সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে খোলা রয়েছে মহিউস সুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণী দুইটি দ্বিতীয় শ্রেণীর দুইটি এভাবে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত দুইটি করে রয়েছে। অথচ তাদের দাবি এটি একটি শাখা।

ঘটনাটি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার আলাওলপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মহিউস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার চিত্র। মাদ্রাসার শিক্ষকের দাবি এটি তারা শাখা হিসেবে খুলেছে। অথচ সাইনবোর্ডে স্পষ্ট লেখা রয়েছে মহিউস সুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসা। এখানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে তিনশত টাকা করে নেয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান এমপিও ভুক্ত এই মাদ্রাসাটির মধ্যে তিনটি কক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়েছে মহিউস সুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। দাখিল মাদ্রাসাটির শিক্ষার মান উন্নয়নের নামে এখানে বিশেষ সুবিধা নিচ্ছে মাদ্রাসার সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

মহিউস সুন্নাহ ইসলামিয়া মডেল মাদ্রাসার প্রধান বলেন ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন এর মাধ্যমে আমরা এই মাদ্রাসার ছয়টি কক্ষ নিয়েছি এবং সেখানে পাঠ দান চলমান আছে। আমাদের দুইশত এর অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে আমরা তাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে তিনশত টাকা করে বেতন হিসেবে নিচ্ছি। রেজুলেশনের কপি চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অত্র মাদ্রাসার সুপারের সঙ্গে কথা বলতে।

মহিউস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবু তাহের জানান, একটি রেজুলেশন এর মাধ্যমেই লেখাপড়ার মান উন্নয়নের জন্য এখানে মাদ্রাসা খোলা হয়েছে। সরকার যেভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা করেছেন তাতে শিশুরা তুষ্ট নয়। তাই লেখাপড়ার মান উন্নয়নে এটি করা হয়েছে। পরে তার কাছে রেজুলেশন এর কপি চাইলে তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন আপনাকে কিছুই দেয়া হবে না আপনি যা ইচ্ছা করতে পারেন।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কলিমুল্লা ব্যাপারী কে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। সংবাদ সংগ্রহের সময়ে তার স্ত্রী এসে হাজির হন মাদ্রাসায়।

তিনি জানান রেজুলেশনের মাধ্যমে গোসাইরহাট উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ইউএনও এর অনুমতি নিয়েই মাদ্রাসা খোলা হয়েছে। সে সময় তিনি সাংবাদিকের কাছে সহযোগিতা চান নিউজটি প্রচার না করার জন্য।

আলাওলপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আমির হোসেন বাবুল হাওলাদার বলেন, এখানে একটি মাদ্রাসা থাকতে মাদ্রাসার ভিতরে অন্য একটি মাদ্রাসা খুলে স্থানীয়দের মাঝে একটি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এই মাদ্রাসার সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা এলাকার মুরুব্বীদের সাথে কোন প্রকার আলাপ-আলোচনা না করেই তারা নিজেদের স্বার্থের জন্য এই কাজটি করেছে। এটি একটি এমপিও ভুক্ত মাদ্রাসা এই মাদ্রাসার বেতন দেয় সরকার সেখানে অন্য একটি মাদ্রাসা খুলে ব্যবসা করছে তারা।

এই বিষয়ে অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওসমান গনি বেপারী জানান, আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা আমার জানা নেই আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম। একটি মাদ্রাসার মধ্যে দুইটি সাইনবোর্ড হতে পারে না ভিন্ন ভিন্ন নামে। এটি বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে করে থাকলে তার ব্যবস্থা নেব।

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, এমন একটি ঘটনা কোনভাবেই হতে পারে না। আর আমি অনুমোদন দিয়েছি এটা সম্পূর্ণই মিথ্যে কথা। আমি এই প্রথম আপনাদের কাছ থেকে শুনলাম। এটি একটি ধান্দাবাজি। বিষয়টি আমি অবশ্যই দেখছি। কোনভাবেই এ ধরনের কাজ করতে পারে না। এমপিও ভুক্ত মাদ্রাসায় অন্য একটি মাদ্রাসা খোলার কোন বিধান নেই।

 


error: Content is protected !!