সোমবার, ২৯শে মে, ২০২৩ ইং, ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ই জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
সোমবার, ২৯শে মে, ২০২৩ ইং

চরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর রাসেল ভাইপার

চরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর রাসেল ভাইপার

ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ। জেলার জাজিরা ও নড়িয়া এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে অহরহ দেখা মিলছে এ সাপটি।

এর মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পদ্মার তীরবর্তী দ্বীপ কাঁচিকাটা ইউনিয়নের একটি এলাকাতেই এক মাসে ধরা পড়েছে ৭টি রাসেল ভাইপার। স্থানীয়রা ৫টি সাপ মেরে ফেললেও স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সহায়তায় বাকি দুটি সাপ উপজেলা বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে সাপটিকে চট্টগ্রামের এন্টিভেনম রিচার্স সেন্টার লোকজন এসে নিয়ে যান।

এ দিকে ভয়ঙ্কর সাপ রাসেল ভাইপার ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনকে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় এমপি ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।

সাপ হস্তান্তরকালে চট্টগ্রাম এন্টিভেনম রিচার্স সেন্টারের ট্রেইনার বোরহান বিশ্বাস রিমন বলেন, বিষাক্তের দিক দিয়ে এ সাপটি পৃথিবীর পঞ্চম স্থানে রয়েছে। তাই যে সব এলাকায় এ প্রজাতির সাপ দেখা যাচ্ছে, সেখানকার লোকজনের সচেতন হওয়া অতি জরুরি। এই সাপের কামড়ে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কাঁচিকাটা ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা এলাকাতে প্রতিনিয়ত দেখা মিলছে রাসেল ভাইপার। বিশেষ করে ঝোপ-ঝাড়ে, মাছ ধরার খাঁচা, জালে ও ধান ক্ষেতে এ সাপ বেশি ধরা পড়ছে। কিন্তু সাধারণ সাপ মনে করে তারা এ প্রজাতির অনেক সাপ মেরে ফেলেছে এবং অনেকে হাতেও ধরেছে।

এ ছাড়া গত সপ্তাহে ওই এলাকার মাহিন নামে ৫ বছর বয়সী এক শিশু সাপের কামড়ে মারা গেছে। তার পায়ে পচন ধরে যাচ্ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে, রাসেল ভাইপারের কামড়েই তার মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড়ে ওই এলাকার এক কৃষকের ৫টি ছাগল মারা গেছে।

চলতি মাসে একই এলাকার একটি কাঁচা বাড়ির বসতঘর খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে ৪৫টি বিষাক্ত গোখরা সাপের বাচ্চা। সাপের তাড়া খেয়ে অনেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে সেখানে।

কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নাজির খান বলেন, আমাদের এখানে প্রতিনিয়তই বিষাক্ত সাপ রাসেল ভাইপার দেখা যাচ্ছে। সাপের কামড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড় থেকে আমার এলাকার লোকজনকে রক্ষা করতে হলে সরকারিভাবে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দেওয়ান বলেন, রাসেল ভাইপার ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গেই আমি ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট দফতরকে অবগত করেছি। আমরা স্থানীয় লোকজনকে নিয়মিত সচেতন করে যাচ্ছি।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাসীফ বলেন, কাঁচিকাটা ইউনিয়নের যে এলাকাটিতে এ সাপের দেখা মিলছে সেখানাকার চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধিদের বলা হয়েছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাতে। আর জেলা সিভিল সার্জন অফিসে এন্টিভেনম রয়েছে। কেউ সাপের কামড় খেলে আতঙ্কিত না হয়ে যেন সেখানে যোগাযোগ করে।


error: Content is protected !!