
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মো. দাদন খলিফা (৩০) নামে এক প্রবাসীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার গয়ঘর খলিফাকান্দি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত দাদন খলিফা ওই গ্রামের সেকেন্দার খলিফার ছেলে। সে শোলপাড়া ইউনিয়নের যুবলীগের কর্মি ও মালয়েশিয়া প্রবাসী।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের ইদ্রিস খান, আজাহার খান, শাহজাহান খান, আতাহার খানের সঙ্গে খলিফা পরিবারের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। ১৯৯৭ সালে দাদনের এক ফুফুকে হত্যা করা হয়। তখন ওই চার ভাইকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়। পরে নানা চাপে মামলাটি চালাতে পারেননি খলিফা পরিবার। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে শত্রুতা চলে আসছে।
খলিফা বংশের দাদন খলিফা গত দুইমাস হয় মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। ১৭ দিন হয় সে পাশের গ্রামে বিয়ে করেন। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির পাশের মসজিদ থেকে তারাবিহর নামাজ আদায় করে বের হয়ে স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরছিলেন দাদন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ইদ্রিস খানের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত তাঁকে ধরে নিয়ে পাশের একটি ফসলি জমির মাঠে কুপিয়ে ও গুলি করে ফেলে রাখা হয়। পরে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা সংকটাপন্ন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা মেওয়ার পথে শুক্রবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
দাদনের চাচতো ভাই রাজ্জাক খলিফা বলেন, ‘ইদ্রিস খান ও তাঁর ভাইয়েরা ২৪ বছর পূর্বে আমার এক ফুফুকে হত্যা করে। সেই বিচার পাইনি। বিচার না হওয়ায় তাঁরা ২৪ বছর পর আবার আমার চাচতো ভাই দাদনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করল। দাদন দুই মাস আগে দেশে আসে। ১৭ দিন হয় তাঁকে বিয়ে দিয়েছি, করোনার কারণে এখনো বউ বাড়িতে তুলে আনতে পারিনি। স্বামীর ঘরে আসার আগেই তার বউ বিধবা হলো। এ হত্যার পরিকল্পনাকারী ও ইদ্রিসদের প্রশ্রয়দাতা এসকান্দার সরদারের বিচার দাবী করছি।
ঘটনার পর থেকে ইদ্রিস ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গ্রাম থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন বলেন, এঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে নিহতের বাবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা এলাকা থেকে পালিয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।