বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে যৌতুকের মাটরসাইকেল না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

শরীয়তপুরে যৌতুকের মাটরসাইকেল না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

শরীয়তপুর চন্দ্রপুরে গৃহবধূ রত্না (২০) সাত মাসের শিশু সন্তান রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু বরণ করেছে। মৃত রত্না মানিকগঞ্জ জেলা সদরের রকিবুল ইসলাম এর মেয়ে। হত্যা না আত্বহত্যা? এই নিয়ে চন্দ্রপুর মহল্লায় চলছে নানান আলোচনা-সমলোচনা। এই রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নেমেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রইম অব অপস বদিউজ্জামান।
গৃহবধূ রত্না শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের উত্তর চন্দ্রপুর সরদার বাড়ির মতিউর সরদার এর ছেলে নাহিদ সরদার (২৪)।

৫ আগষ্ট শনিবার সকালে গৃহবধূ রত্নার বাবা রকিবুল ইসলাম রতন বলেন, আমার মেয়েকে তিনদিন ধরে জামাই,শশুর-শাশুরি মিলে মারছে। কিছু দিন আগে আমার কাছে একটা মাটরসাইকেল চাইছিল।

কয়েক মাস আগে আমার মেয়ের ডেলিভারি হওয়ার সময় আমি প্রায় এক,দেড় লাখ টাকা দিছি। এক বছর মেয়ের পোলাপান হওয়া পর্যন্ত আমার কাছেই ছিলো। তারপর আমি বলছি,বাবা কিছু দিন পরে, আমি হুন্ডা-টা দিমু। পনেরো দিন আগে জামাইর সাথে আমার এই কথা হইছিলো। তারপর হঠাৎ কইরা,তিনদিন আগে অন্য একটা নাম্বার দিয়া আমার মেয়ে ওর মাকে ফোন দেয়। আমার মেয়ের মোবাইল টাও নিয়ে যায়। মেয়ে অন্য একজনের ফোন দিয়া আমার স্ত্রীকে বলে, মা,আব্বাকে বলো, যেভাবে পারে হুন্ডাটা দিয়ে দিতে। আমারে খুব টর্চারিং করতাছে। নাইলে আমি বাঁচমু না,আমারে লইয়া যাও। কালকে হঠাৎ কইরা। পাশের এক প্রতিবেশী আমার স্ত্রীর নাম্বারে কল দিয়া কইতেছে। আপনার মেয়ে তো আর নাই।

সন্ধ্য ৬টা বাজে এই কাহিনী হয়ে গেছে। আপনার মেয়ে নাকী সুইসাইড করছে, কিন্তু আমাদের বিশ্বাস হইতেছে না। আমি জামাইরে ফোন দেই ধরে না। ওর শশুড়রে ফোন দেই ধরে না। পরে ওর শাশুড়িরে ফোন দিলে, ফোন ধরে থানার এক কনস্টবল। ধরে বলে এটা পালং থানা। আপনার মেয়ে তো এরকম হইছে-,মারা গেছে রাতের ৯ টা বাজে। আমাদের বিশ্বাস হয় না। আমরা খবর পেয়ে রাতেই রওনা দেই। আসতে ৪ টা বাজে। এসে থানায় যোগাযোগ করি। লাশটা মর্গে পাই। এখনো মর্গে আছে। এক পর্যায়ে দেখি মর্গও বন্ধ, থানায়ও ওসি সাহেব নাই, কেউ নাই। আমরা পরে এলাকায় যাই। এলাকাবাসী বলতেছে,আপনার মেয়ে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। তিন দিন ধরে,আপনার মেয়েকে মারতেছে। ওর স্বামী ঢাকা থাকে চার দিন ধরে এসেছে। আসার পর থেকেই ওর শাশুড়ি আর জামাইতে ধরে মারতাছে। তারা মাইরা-ধইরা ঐঘরে গামছা দিয়া ঝুলায়ছে। আমার মেয়ে যেখান থেকে ফাঁসি নিয়েছে,সেখান থেকে আমার মেয়ের হাইট আরো উঁচা। আমার মেয়ের শরীরে জখম,মাথায় জখম,বিভিন্ন জায়গায় এমন জখমের চিহ্ন দেখছি। পরে আমরা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি সাহেব বলে,লাশের ডিএনএ আসুক, এই আসুক, সেই আসুক! পরে আমরা ডিসি সাহেব এর শরণাপন্ন হই। পরে-ডিসি সাহেব ওসি সাহেবকে ডাকানোর পরে। ওসি সাহেব এই মাত্র সরেজমিনে তদন্তে গেলো। এখন মামলার প্রক্রিয়া চলতেছে।

এবিষয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রইম অব অপস বদিউজ্জামান বলেন,আমার এখানে দুইটা ফাঁড়ি আছে, চিকন্দি ফাঁড়ি ও সন্তোষপুর ফাঁড়ি। দুইজন ইনচার্জ আছে। তারপরেও এই ঘটনায় আমি এসেছি রহস্য উন্মোচন করতে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাবে না।


error: Content is protected !!