
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া এক শিশুর মরদেহ দাফনের পর রাতে কবর খুঁড়ে মরদেহ তুলে এনে জামা–কাপড় পরিয়ে একইসাথে ঘুমিয়েছেন এক কিশোর। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় বৃহস্পতিবার ২৯ ডিসেম্বর সকালে ওই কিশোরের বিছানা থেকে তিন বছরের মৃত ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা।
স্থানীয়দের ও স্বজনদের সূত্র মতে জানা যায়, বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বড় কাচনা গ্রাম এর শফিক মাদবরের ছেলে নাইম (৩) পানিতে পরে ডুবে মারা যায়। সন্ধ্যায় তার জানাজা নামাজ শেষে পশ্চিম বড় কাচনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর পিছনে পারিবারিক কবরস্থানে শিশুটিকে দাফন করা হয়। কিন্তু সকালে দেখা যায়, কবরের মাটি সরানো। এবং শিশুটির মরদেহও নেই।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশুটির এক আত্মীয় মোকলেছ ফকির এর কিশোর ছেলের খালি ঘরে পাওয়া যায় ওই মরদেহ। পরিবারের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে মোকলেছ ফকিরের ছোট ছেলে রাজন ফকির (১৫) কবর থেকে শিশুর মরদেহ তুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিশোরটি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি বলে যানা যায়।
স্থানীয়রা আরো জানান, কবরে মরদেহ না থাকার বিষয় সকালে জানাজানি হলে খোঁজ-খবর শুরু হয়।এরপর কিশোর রাজন ফকিরের কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, সে মরদেহ তুলে নিয়ে গেছে। পরে তার এক ভাইয়ের ঘরে গিয়ে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। দেখা গেছে, খাটের ওপর রেফ্রিজারেটরের কার্টন বিছিয়ে শিশুটিকে ট্রাউজার ও শার্ট পরিয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছে।এবং একটি সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে। বলছে, রাতে একসঙ্গে ঘুমিয়েছিল বলে জানান তারা।
শিশুটির দাদা সাইদুল মাদবর বলেন, ‘আমার নাতি নাইম পানিতে পড়ে মারা যায়। তাকে সন্ধ্যায় আমরা দাফন করে আসি। আজ সকালে দেখি তার কবরে তার লাশ নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে জানতে পারি, আমার ভাইগ্না রাজন ফকির রাতে কবর থেকে আমার নাতির লাশ তুলে নিয়ে গেছে। কাফনের কাপড় ফেলে দিয়ে সে লাশকে জামাকাপড় পরিয়ে খাটে শুইয়ে রাখে। তার পাশে শুয়ে রাত্রিযাপন করে রাজন।’
সাইদুল মাদবর আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে রাজন জানায়, শিশুটি কবরে একা একা কীভাবে থাকবে! তাই সে কবর থেকে নাইম এর লাশ তুলে নিয়ে আসছে। আবার বলে, দাফনের সময় সবাই নাইমকে দেখেছে কিন্তু সে দেখতে পারেনি বলে তুলে নিয়ে আসছে। পরে লাশ পুনরায় দাফন করা হয়েছে।’