
জাজিরায় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় জাজিরার বিলাশপুর মুলাই বেপারী কান্দি গ্রামের অন্তত ২০টি বাড়ীতে ভাংচুর ও লুটপাটের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ধাওয়ায় জঙ্গল দিয়ে পালানোর সময় সাপের দংশনে আলী আজগর সরদার নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতের পরিবারের দাবী আলী আজগর ভাংচুর ও লুচপাট করেত যায়নি। সে ভাংচুর না করার পরামর্শ দিতে গিয়েছিল। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত জাজিরা থানায় কোন মামলা হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্থ সোবহান বেপারী, মজিবর বেপারীরর স্ত্রী সালেহা বেগম ও জাজিরা থানা সুত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কুদ্দস বেপারীর সঙ্গে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী আবু তাহের সরদার এবং তার সমর্থক জলিল মামদবর ও ফারুক হালাদার গ্রুপের সঙ্গে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার রাত সন্ধ্যায় দিকে বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী আবু তাহের সরদারের সমর্থক বিলাশপুর মুলাই বেপারী কান্দি গ্রামের ফারুক হাওলাদার ও জলিল মাদবরের নির্দেশে আলী আজগর সরদার, নুরুজ্জামান সরদার, সাত্তার মোল্যা, শ্যামল সরদার, আমজেদ সিকদার সহ ৩০-৪০ জন মিলে সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থক মুলাই বেপারী কান্দির মজিবুর বেপারী, সোবহান বেপারী আলী আকবর বেপারী, আমিনুদ্দিন সরদার, আজিজুল সরদার, গফুর সরদারের বাড়ীঘরসহ অন্তত ২০টি বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় বাড়ীতে থাকা লোকজন বাঁধা দিলে তাদের শিশু সন্তানদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় হামলা কারীরা। এতে ভয়ে কেউ প্রতিহত করার চেষ্টা করেনি। এ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জাজিরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গফুর সরদারের বাড়ী ভাংচুরের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা জঙ্গল দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুলাই বেপারী কান্দির নুরু সরদারের ছেলে আলী আজগর সরদার (৪০) কে বিষাক্ত সাপে দংশন করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের ছোট ভাই সিরাজ সরদার বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের সরদারের লোক ফারুক হাওলাদার ও জলিল মাদবর গ্রুপের সাথে সাবেক চেয়ারম্যান কুদ্দস বেপারীর সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। গতকাল রাতে একপক্ষ অপর পক্ষের বাড়ী ঘর ভাংচুর করেছে। এ সময় আমার ভাই আলী আজগর সরদার বাড়ী ভাংচুর করতে যায়নি। সে ভাংচুর থামাতে গিয়েছিল। ফেরার পথে তাকে সাপে কামড় দিয়েছে। শরীয়তপুর হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
গফুর সরদারের মেয়ে মোৗসুমি ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, ভাংচুর করার সময় পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পালানোর সময় আলী আজগরকে সাপে কামড় দেয়। এতে তার মৃত্যু হয়।
বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকরা কোন কারণ ছাড়াই তার নির্দেশে আমার সমর্থকদের বাড়ী ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী আবু তাহের সরদার বলেন, আমি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। ইউনিয়নের সবাই আমার সমর্থক। আমার কোন পক্ষ বিপক্ষ নেই। সাবেক চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা সঠিক নয়। সে আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তার সাথেও আমার কোন বিরোধ নেই।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, এলাকার অধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। বুধবার রাতে ভাংচুরের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। এ ঘটনায় মামলা দিতে বলেছি। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।