শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই বছর যাবত ঘর তালা দিয়ে রেখেছেন, পরিবারটিকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় জাজিরা থানায় ও শরীয়তপুর আদালতে কয়েকটি মামলা করলেও কোন সমাধান পায়নি অসহায় পরিবারটি।
উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ছারি মাহমুদ শিকদার কান্দি গ্রামের মৃত সোনামিয়া শেখের ছেলে মজিবর শেখের পরিবারটিকে ২০১৬ সালে ৬ সেপ্টেম্বরে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ঘরে তালা দেন স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল হামিদ শেখ তার লোকজন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ছারি মাহমুদ শিকদার কান্দি গ্রামের মজিবর শেখের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুল হামিদ শেখের দীর্ঘদিন যাবত সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারই জেরে ২০১৬ সালে ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আব্দুল হামিদ শেখ ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারীভাবে কোপায় আব্দুল হামিদ শেখের লোকজন। তখন জাহানারা বেগমের সারা শরীরে কোপ লাগে। আহত অবস্থায় তাকে জাজিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেলে পাঠান। সেখানে জাহানারা ১ মাস চিকিৎসার পর পরিবার নিয়ে নিজ বাড়িতে আসলে আবার মারধর করে তাড়িয়ে দেন এবং ঘরের প্রতিটি দরজায় তালা মেরে রাখে আব্দুল হামিদ শেখের লোকজন। ২০১৬ সাল থেকে অদ্যবধি সেই ঘরে একাধিক তালা মেরে রেখেছে তারা।
ভুক্তভোগী মজিবর শেখ বলেন, বড়কান্দি ইউনিয়নের ৮২ নং ছারি মাহমুদ শিকদার কান্দি মৌজার ৪৪০ নং আর এস, ১৯০ ও ১৯১ নং বিআরএস দাগে আমার মা বড়বিবির নামে ১৬ শতাংশ, দুই বোন আলেয়া ও শাফির নামে দুই শতাংশ জমি। মোট ১৮ শতাংশ জমি ক্রয় করি। আর আমার পৈত্তিক দুই শতাংশ জমি। কিন্তু সেই ২০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করতে চায় আব্দুল হামিদ শেখ, তার ছেলে আবুল বাদশা, সোহেল শেখ, ফারুক শেখ, কামরুল শেখ এবং তার স্ত্রী রাহিলা বেগম। সেই দখলে বাঁধা দেয়ায় আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। আমাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ঘরে তালা মেরে রেখেছে। ওদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেও কোন লাভ হয়নি। দুই বছর যাবত আমার ঘর তালাবদ্ধ আছে। বাড়িতে ঢুকতে চাইলে মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে। আমি পরিবার নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে পাছি না। এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয় ঘরের সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি, টিউবয়েলসহ ঘরের সকল আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে গেছে এবং বাড়ির গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে আব্দুল হামিদ শেখের লোকজন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ শেখের ছেলে মো. ফারুক শেখ বলেন, তারা আমাদের সম্পত্তিতে থাকে। এ সম্পত্তি নিয়ে তাদের সাথে আমাদের ঝগড়া হয়েছে ঠিক আছে। কিন্তু আমরা ঘরে তালা মারি নাই। মজিবর শেখ ও তার পরিবার ঘরে তালা মেরে ঢাকা চলে গেছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় আব্দুল হামিদ মাল বলেন, সম্পত্তি মজিবর শেখের। কিন্তু জোর করে দখল করতে চায় আব্দুল হামিদ শেখরা। সম্পত্তির জন্য মজিবর শেখের পরিবারকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে ওরা। এখন ঘরে তালা মেরেছে। এটা নি:সন্দেহে অন্যায়।
এ ব্যাপারে জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্তÍ কর্মকর্তা (ওসি) বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি নতুন আসছি এই থানায়। এ বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।