বরেণ্য বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১০ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শরীয়তপুরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শরীয়তপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৯ মে) বেলা ১১টায় শরীয়তপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক জেলা কমান্ডার আব্দুল জলিল হাওলাদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব মুন্সী। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হোসেন খানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিম উদ্দিন শেখ, সাবেক জেলা সহকারী কমান্ডার জানে আলম মুন্সী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রাজ্জাক। এ সময় জেলার অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি লালদিঘীর ফতেহপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুনেসার চার পুত্র ও তিনকন্যার মধ্যে ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি ও পীরগঞ্জ থানার হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জিলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
১৯৫৬ সালে ওই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষাবর্ষে হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ‘ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদস্থ করা হয়।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক পুত্র সজিব ওয়াজেদ ও এক কন্যা সায়মা ওয়াজেদ রয়েছে।