মঙ্গলবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
মঙ্গলবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে ডেঙ্গু আতঙ্কে হাসপাতালে রোগীর ভীড় বেড়েই চলছে

শরীয়তপুরে ডেঙ্গু আতঙ্কে হাসপাতালে রোগীর ভীড় বেড়েই চলছে

শরীয়তপুরে ডেঙ্গু আতঙ্কে সরকারি হাসপাতাল গুলোতে প্রতিনিয়ত রোগীর ভীড় বেড়েই চলছে। সর্দি বা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জ্বর হলেও প্রথমেই ডেঙ্গু আতঙ্কে রক্তের এনএস ওয়ান, আইজিজি-আইজিএম ও সিবিসি পরীক্ষা করানোর জন্য সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ভীড় জমায় রোগীরা। পরীক্ষা নীরিক্ষা শেষে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করা হয়। রক্ত পরীক্ষা করা রোগীর তুলনায় ডেঙ্গু চিহ্নিত রোগীর সংখ্যা খুবই নগন্য।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ৭ জন, জাজিরা হাসপাতালে ৪ জন ও গোসাইরহাট হাসপাতালে ৫ জন। নড়িয়া, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ হাসপাতালে কোন ডেঙ্গু রোগী চিহ্নিত করা যায়নি। এই পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়। এই পর্যন্ত ৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যান্যরা চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। যে ৩ জন নারী রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে তাদের কেউই জেলার কোন সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি বলে জানা গেছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে গিয়ে বুধবার দুপুর ১২টায় দেখা যায় ৩৫ জন রোগীর রক্ত পরীক্ষার কাজ চলছে। আরো অনেক রোগী প্যাথলজি কক্ষের সামনে অপেক্ষা করছেন। প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ জানায়, ডেঙ্গু আতঙ্কে বেশীর ভাগ রোগী আসে। গত ২৪ ঘন্টায় শতাধিক রোগীর রক্ত পরীক্ষা করে ৭ জনের রক্তে ডেঙ্গুর ভাইরাস পাওয়া গেছে।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুনেরও বেশীতে দাঁড়িয়েছে। বুধবার বহির্বিভাগের মহিলা কাউন্টারে ২৫৫, পুরুষ কাউন্টারে ১৮৯ ও শিশু কাউন্টার থেকে ১৮১ জন রোগীর মাঝে টিকিট বিতরণ করা হয়েছে। ভর্তি রোগীদের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। ১০০ শয্যার হাসপাতালে ১০০ জন ভর্তি রোগীর জন্য সরকারী ভাবে খাবার সরবরাহের নিয়ম থাকলেও বুধবার ২৩৫ জন রোগীর মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত রোগীকে খাবার সরবরাহ করতে গিয়ে নানান অনিয়মের আশ্রয় গ্রহন করতে হয় তাদের। খাবার বিতরণকারী জানায়, ভর্তি প্রত্যেক রোগীই খাবারের দাবীদার। তবুও খাবার বিতরণের সময় রোগীর চেহারা ও পোষাকের দিকে তাকিয়ে খাবার বিতরণ করি। যদি সকল ভর্তি রোগীকে খাবার প্রদান করি তাহলে অর্ধেক রোগীর মাঝেই তা শেষ হয়ে যাবে। তাই যাদের পোষাক পরিচ্ছেদ ভালো তাদের খাবার না দিয়ে গরীব রোগীদের খাবার সরবরাহ করি।
বেসরকারি ক্লিনিক মালিক সমিতির পক্ষে নয়ন সরকার জানায়, ডেঙ্গু চিহ্নিত করতে রক্তের এনএস ওয়ান, আইজিজি-আইজিএম ও সিবিসি পরীক্ষা করতে হয়। সাধারণত এই তিনটি পরীক্ষার জন্য রোগীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা নেয়া হয়। ডেঙ্গু আতঙ্কে যে সকল রোগীর রক্ত পরীক্ষা কর হয় তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি ১ হাজার ৪০০ টাকা নেয়া হয়। প্রথমে ডেঙ্গু রোগীর খুব চাপ ছিল। এখন অনেকটা কম।
সিভিল সার্জন ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতাল গুলোতে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৫২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১৬ জন রোগী নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত যে তিন নারীর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে তাদের কেউই জেলার কোন সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। হাসপাতালে ভর্তির কোন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়নি।


error: Content is protected !!