
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের দাইমদ্দিন হাজীকান্দি গ্রামে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে আবু সিদ্দিক বেপারী (৫০) নামের এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় একপক্ষ বলছে, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে; অপরপক্ষের দাবি, শারীরিক আঘাতে নয়, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
নিহত আবু সিদ্দিক বেপারী ওই গ্রামের মৃত হাসেম আলী বেপারীর ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিদ্দিকের ভাতিজা রাকিব বেপারীর সঙ্গে প্রতিবেশী হাসান বেপারীর দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সালিশ বৈঠকেরও আয়োজন ছিল।
তবে তার আগেই ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। দুপুরে রাকিব বেপারী মোটরসাইকেলযোগে স্থানীয় বাজারে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষ হাসান বেপারীর বাড়ির সামনে তাকে বাধা দেওয়া হয়। রাকিব বিষয়টি চাচা আবু সিদ্দিককে জানালে তিনি মোটরসাইকেল ছাড়িয়ে আনতে ঘটনাস্থলে যান। অভিযোগ, তখনই রাকিব, খোকন, জালালসহ ১০-১২ জন মিলে সিদ্দিকের ওপর হামলা চালায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছে। নিহতের ভাতিজা রাকিব বেপারী বলেন, “আমার চাচাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।”
অন্যদিকে অভিযুক্তদের একজন জালাল বেপারীর মেয়ে রুনা আক্তারের দাবি, “মারামারির সময় হঠাৎ স্ট্রোক করে তিনি মারা গেছেন, তাকে কেউ ইচ্ছাকৃত মারেনি।”
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. রোমান বাদশা বলেন, “আবু সিদ্দিক বেপারী হাসপাতালে আনার আগেই মারা গিয়েছিলেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, “মৃত্যুর কারণ নিয়ে দুটি ভিন্ন মত রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে, এটি হত্যা ছিল নাকি হৃদরোগজনিত মৃত্যু। সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিনের পারিবারিক দ্বন্দ্বই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী, তবে সেটি হত্যা না দুর্ঘটনা—তা এখন নির্ভর করছে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ওপর। এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে উত্তেজনা।