
শরীয়তপুরে আওয়ামীলীগ নেতা মো: ইকবাল হোসেন হারুন খালাসীসহ ০৫ জন সন্ত্রাসী হারুন খালাসীর দ্বিতীয় স্ত্রী নারগীছ(৪৫)কে মাথায় কুপিয়ে ও হাতুড়ী দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে। গত ২৬ মে সোমবার সন্ধ্যায় নারগীছের বাবার বাড়ি সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সারেঙ্গায় এ হত্যা কান্ডের চেষ্টা করা হয়। ভূক্তভোগী নারগীছ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রথম বিয়ে গোপন রেখে ২০১৭ সালে হারুন খালাসী নারগীছকে মাদারীপুর নিয়ে চালাকি করে জোরপূর্বক বিয়ে করে। নারগীছেরও এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম ঘরে নারগীছের দুই মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। বিয়ের পরে নারগীছকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে উঠায়নি হারুন খালাসী। বরং স্বামীর মর্যাদা নিতে নারগীছের বাবার বাড়ি ছুটে আসে বারবার। নারগীছের কাছ থেকে বাড়ি ও ঘর করে দিবে বলে হাতিয়ে নেয় প্রায় ৭’লাখ টাকা এবং সদর উপজেলার মাহমুদ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে টিউবওয়েল ও ঘর দিবে বলে নারগীছের আত্মীয়-স্বজন থেকে না জানিয়ে হাতিয়ে নেয় আরও প্রায় সাড়ে ৩’লাখ টাকা। আওয়ামীলীগ সরকার পতন হওয়ার পর নারগীছের প্রবাসী ছেলে ও আত্মীয়-স্বজন টাকা ফেরতের জন্য নারগীছকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। সেই বিষয়ে নারগীছ হারুন খালাসীকে বারবার টাকার জন্য বলে। টাকা ফেরতের কথা বললেই নারগীছকে মারধর ও গালিগালাজ করতো হারুন খালাসী। এছাড়া ৫’লাখ টাকা যৌতুক চেয়েছে হারুন খালাসী এমন একটি মামলা নারগীছ করায় সেই ৫’লাখ টাকা উল্টো বারবার চেয়ে গালিগালাজ ও মারধর করেছে একাধিকবার হারুন। হঠাৎ গত ২৬ মে সোমবার সন্ধ্যায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে দুইটি মোটর সাইকেল যোগে নারগীছের বাবার বাড়ি এসে নারগীছকে বাহিরে একা ডেকে মাহমুদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মাহমুদপুর গ্রামের মরহুম তৈয়ব আলী খালাসীর ছেলে স্বামী হারন খালাসী(৪৮)সহ তৈয়ব আলী ঢালীর ছেলে মোশাররফ ঢালী(৪২), কাদের খালাসীর ছেলে সাইফুল খালাসী(২৫), মরহুম তৈয়ব আলী খালাসীর ছেলে ফারুক খালাসী(৪৫) ও কাদের খালাসীর ছেলে এলেম খালাসী এলোপাথাড়ি হাতুড়ী দিয়ে পিটায় এবং ধারালো ছেনদা দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও গলায় ওড়না পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে নারগীছকে হত্যার চেষ্টা করে। পরে নারগীছের বসতঘর থেকে তার দুই মেয়ে নাছিমা ও পুষ্প ছুটে এলে হারুন খালাসীসহ সবাই দৌড়ে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। জখমকৃত অচেতন নারগীছের অবস্থার অবনতি দেখে জামাল হোসেনের ভ্যানযোগে সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে নারগীছ বাদী হয়ে নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল-২০০০ আইনে কোর্টে একটি মামলা করে এবং উপযুক্ত বিচার দাবি করে বিচারকের নিকট।
এ বিষয়ে নারগীছের মেয়ে পুষ্প বলেন, হারুন খালাসী আমাদের ও আমাদের আত্মীয় স্বজনদের থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। মা এ কথা বলতে গেলে এবং আমার মায়ের অধিকার চাইলে মা’কে অনেক গালিগালাজ ও মারধর করতো হারুন খালাসী। গত ২৬ মে সোমবার সন্ধ্যায় আমার মা’কে মেরে ফেলার পরিকল্পনায় মাথায় কুপিয়ে আঘাত করে এবং হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করে। আমরা আইনের নিকট এর বিচার চাই।
প্রতিবেশী ভ্যানচালক জামাল হোসেন বলেন, নারগীছের অবস্থার অবনতি দেখে আমার প্রতিবেশির একটি ভ্যানযোগে নারগীছকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমরা আসার আগেই হারুন খালাসী পালিয়ে যায়।
নারগীছের ভাই গণি ও মা বলেন, আমাদের নারগীছকে মেরে ফেলার জন্য হারুন খালাসী যে আঘাত করেছে। আইনের নিকট এর উপযুক্ত বিচার চাই আমরা।
হারুন খালাসীর নিকট এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি কিছুই বলবো না আপনারা তদন্ত করে বের করুন আমি দোষী কিনা? যদি দোষী হই, বিচার মাথা পেতে নিব।
নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল কোর্ট কর্তৃপক্ষ জানান, গত ১লা জুন নারী ও শিশু বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালে নারগীছ বাদী হয়ে ১২৩/২৫ নং একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি পালং মডেল থানায় তদন্তের জন্য পাঠায় বিজ্ঞ আদালত।
পালং মডেল থানা ওসি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের হাতে কোর্ট থেকে এখনো তদন্ত করতে আদালত থেকে চিঠি পাইনি। চিঠি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে কোর্ট ব্যবস্থা নিবে।