Saturday 14th June 2025
Saturday 14th June 2025

ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা || ভোলার লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়

ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা || ভোলার লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়
ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা || ভোলার লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়

আগামী কাল শনিবার শেষ হচ্ছে ঈদের সরকারি ছুটি। আর তাই এক দিন আগেই দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে কর্মস্থলে পরিবার পরিজন নিয়ে ফিরতে শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। ভোলার লঞ্চ ও ফেরি ঘাটে ছিলো হাজার হাজার মানুষের ঢল । যে যেভাবে পারছে লঞ্চ সি ট্রাক আসা মাত্র যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। নৌযান সংকটের কারণে অনেক যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ ট্রলার ও স্পীড বোটে মানুষ যাতায়াত করছে। এসময় তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তবে এসময় নৌ পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপ দেখা যায় নি।রোদে ও বৃষ্টিতে ভিজে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ ছিল না। আজ শুক্রবার সকালে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে এ দৃশ্য দেখে যায়।

ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা লঞ্চ ঘাটে ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকে। ঘাটের প্লটুনে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ তীব্র গরমে নৌযানে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছে। লঞ্চ আসা মাত্র যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ইলিশা-লক্ষীপুর রুটের লঞ্চ ও সী ট্রাক গুলোতে দুই থেকে তিনগুণ অতিরিক্ত যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। নৌ যানের তুলনায় অতিরিক্ত যাত্রী হওয়াতে অনেকেই লঞ্চঘাটে অপেক্ষা করতে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। আবার অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ ট্রলার, স্পীড বোট দিয়ে মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও স্পীড বোটের ৩ শত টাকার ভাড়া ১ হাজার টাকা রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
এ রুটে ২টি লঞ্চ ও ৪টি সীট্রাক চলাচল করলেও বর্তমানে যাত্রীর তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম । এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজের তাগিদে পরিবার পরিজন নিয়ে নৌযানে গাদাগাদি করে উত্তাল মেঘনা পারি দিচ্ছে নিরুপায় সাধারন মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। আগামী শনিবার পর্যন্ত এ ভীড় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে লঞ্চঘাট সংশ্লিষ্টারা। এদিকে করোনা সংক্রামন রোধে যাত্রীদের মাস্ক পরার জন্য সর্তক করা হলেও অধিকাংশ যাত্রী তা ব্যবহার করেনি।

যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ইলিশা লঞ্চঘাটে যে পরিমাণ যাত্রী রয়েছে লক্ষ্মীপুর যাওয়ার জন্য সেই পরিমাণ লঞ্চ বা সিট্রাক নেই। যা রয়েছে তা আবার সাইজে ছোট। ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে তারা পারাপার করেছে। এতে করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে আরও লঞ্চ-সিট্রাক প্রয়োজন। লঞ্চ না পেয়ে অসংখ্য যাত্রী পরিবার পরিজন নিয়ে তীব্র গরমে আবার বর্ষায় ঘাটে অপেক্ষা করছে। শত শত যাত্রীদের জন্য নেই প্রয়োজনীয় যাত্রী ছাউনী। ফলে খোলা আকাশের নিচে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরবর্তী লঞ্চের জন্য।যাত্রীরা জানায়, সরকারের উচিৎ ছিলো এ রুটে ঈদের সময় বড় লঞ্চ বা আরও লঞ্চ-স্টিমার চালু করা।

ভোলায় কর্মরত বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্ত্বা বিভাগের ট্রফিক ইন্সফেক্টর(টিআই) মো. জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ইলিশা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে ২টি লঞ্চ ও ৪টি সিট্রাক চলাচল করছে। এ ছয়টি নৌযানের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা আছে প্রায় ৮০০। এরমধ্যে এমভি পারিজাত নামক লঞ্চটি বরিশাল থেকে ছাড়ে। ইলিশা লক্ষ্মীপুর নৌপথে নিরাপদে যাত্রী পারাপারের জন্য ১০মিনিট অন্তর অন্তর লঞ্চ চলাচল জরুরী। কিন্তু এসব নৌযানের একবার(এক সার্কেল) করে যাত্রী পারাপারের অনুমোদন আছে। এ নৌপথে আব্দুস সালাম নামের আরও একটি সিট্রাক চলাচলের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু সেটি ডক-ইয়ার্ডে বসে আছে। যান্ত্রীক ত্রুটির কারণে নামাতে পারেনি। যাত্রীর তুলনায় বৈধ নৌযান কম হওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা অবৈধ নৌযানে চড়ছে। তারপরেও মেঘনা নদীতে অবৈধ নৌযানে যাত্রী পারাপার বন্ধ করতে তাঁরা একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়েছেন। এ পর্যন্ত ৪টা স্পিডবোট ও ১টি ট্রলারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
এ ছাড়াও করোনা সংক্রামনরোধে মাস্ক ব্যবহারের জন্য যাত্রীদের সচেতন করছেন।