Thursday 26th June 2025
Thursday 26th June 2025

খাল পুনঃখননে বদলে যাচ্ছে শরীয়তপুরের কৃষিচিত্র, সেচ সুবিধায় হাসি কৃষকের মুখে

খাল পুনঃখননে বদলে যাচ্ছে শরীয়তপুরের কৃষিচিত্র, সেচ সুবিধায় হাসি কৃষকের মুখে
খাল পুনঃখননে বদলে যাচ্ছে শরীয়তপুরের কৃষিচিত্র, সেচ সুবিধায় হাসি কৃষকের মুখে

দীর্ঘদিন পর নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে শরীয়তপুর জেলার খালগুলো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে খাল পুনঃখনন ও পলি অপসারণ কার্যক্রমের ফলে কৃষকদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। অনাবাদি হয়ে পড়া বহু জমি এখন আবার আবাদযোগ্য হয়ে উঠেছে।

শরীয়তপুর একটি কৃষিনির্ভর জেলা। এখানকার চাষাবাদ মূলত নদী ও খালের জোয়ার-ভাটার পানির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু খালগুলোর বেশিরভাগই দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। ফলে বিশেষ করে ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা সেচের পানির অভাবে বিপাকে পড়তেন। অনেক জমি স্রেফ পানির অভাবে পতিত পড়ে থাকত। বর্ষায় আবার জমা পানি ও জলাবদ্ধতা ফসলের ক্ষতি করত।

এই বাস্তবতায় এলজিইডির ‘সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জেলার ১১টি খালের ২০ কিলোমিটার জুড়ে পলি অপসারণ ও পুনঃখনন করা হয়। ফলে প্রায় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। এ উদ্যোগ শুধু ফসল উৎপাদনই বাড়ায়নি, বরং বর্ষা ও আগাম বন্যার ক্ষতি থেকেও রক্ষা করছে ফসল।

সদর উপজেলার চিতলিয়া, মোল্লাবাড়ি, রহমান চৌকিদারবাড়ি, দামড়া, নড়িয়ার জপশা ও গোসাইরহাটের কুচাইপট্টি খালসহ গুরুত্বপূর্ণ খালগুলোর পুনঃখননে তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এসব এলাকার কৃষকরা এখন আবার ইরি-বোরো চাষ করছেন, বাড়াচ্ছেন সবজি চাষও। এক ফসলি জমি পরিণত হচ্ছে বহু ফসলি জমিতে।

এছাড়াও, খালে সারা বছর পানি থাকার কারণে বাড়ছে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন, উপকৃত হচ্ছেন মাছজীবীরা। সেচ, নিষ্কাশন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। স্থানীয় কৃষক আনোয়ার মাল, শেখ আলাউদ্দিনসহ অনেকেই জানান, টেকের হাট থেকে আংগারিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এবং সমিতির হাট থেকে আংগারিয়া নদী পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার খালের পুনঃখনন এলাকায় চাষাবাদে দারুণ সুফল পাচ্ছেন কৃষকরা।

শরীয়তপুর জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. রাফেউল ইসলাম বলেন, “বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব। কৃষকের টিকে থাকা মানেই দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যেই খাল পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে, যার সুফল এখন চাষিরা হাতেনাতে পাচ্ছেন।”

প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে শরীয়তপুরে শুধু কৃষি নয়, বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা ও আঞ্চলিক অর্থনীতি।