
নরসিংদীর পলাশে ছাত্রদল—বিএনপির সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল কর্মী ইসমাইল হোসেন (২৬) শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ১৫ জুন পলাশ উপজেলার বিএডিসির মুড়ে ছাত্রদল এবং বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের সমর্থকদের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিতে ইসমাইল হোসেন আহত হয়। ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত ইসমাইল ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ভূইয়া ছেলে। তিনি ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা যায়।
নিহত ইসমাইলের পিতা আব্দুর রহিম ভূঁইয়া জানান, শনিবার দুপুর দুই টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ছেলে ইসমাইল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে এবং হস্তান্তরের পর রাতেই নরসিংদীর পলাশে নিজ এলাকায় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। হত্যায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত এ হত্যার বিচার দাবি জানান তিনি।
এর আগে গত রবিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় ঘোড়াশাল পৌরসভার পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিএডিসির মোড়ে পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান পাপন ও জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের শোডাউনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে আহত ইসমাইলকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার ৬ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইসমাইল মারা যায়। এ ঘটনায় রবিবার রাতেই ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সিয়াম মিয়া বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর কবির জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামী করে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপর দিকে জুয়েলের পক্ষ থেকে আলম মোল্লাসহ বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ্য করে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনার জেরে গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিএনপি নেতা জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে।
পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন সোহেল বলেন, নিহত ইসমাইল হোসেন ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েল ও তার লোকজনের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গত ১৫ জুন ছাত্রদলের পক্ষে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করা হলে প্রতিপক্ষ জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে ইসমাইলসহ ১০ জন আহত হয়।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মনির হোসেন বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ নরসিংদীতে আনা হবে।