
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তাঁদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ক্যামেরাও। বৃহস্পতিবার ১৮ জুন বিকেল ৫ টার দিকে শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাত ১০টার দিকে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টার দিকে শরীয়তপুর ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক রোকনুজ্জামান পারভেজ ও জিটিভির সাংবাদিক মো. মানিক মোল্লা সংবাদ সংগ্রহের জন্য শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে যান। যেয়ে দেখেন সেখানে নির্বাহী প্রকৌশলী নিজে গাজাসেবন করছেন এমন দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করতে গেলে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তাদের মোবাইল ক্যামেরা এবং তাঁদের লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে প্রকৌশলীর অফিসে ওই সাংবাদিকদেরকে আটকে রাখেন।
সাংবাদিক রোকনুজ্জামান পারভেজ বলেন, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল সদর উপজেলার ডোমসারে একটি পানির পাম্পের কাজ করছে। সেই পানির পাম্পের চলমান কাজের বিস্তারিত তথ্যের জন্য শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী আশাদুজ্জামান মৃদুলকে মুঠোফোনে ফোন দেই। তখন তিনি আমাকে তার অফিসে যেতে বলেন। তথ্যের জন্য ওই ভবনে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিসের দরজা খুলতেই দেখি তিনি পায়ের ওপর পা তুলে সিগারেট সেবন করছেন। তখন গাজার গন্ধে তার অফিস কক্ষে ঢোকাই কষ্ট হচ্ছিল। প্রকৌশলী গাজা সেবন করছেন এমন দৃশ্য আমার সাথে থাকা জিটিভির সাংবাদিক মো. মানিক মোল্লা তার মোবাইলে ধারণ করতে গেলে তার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেন তিনি। প্রকৌশলী বলেন আপনারা এখানে কেন আসছেন? না বলে ছবি তুললেন কেন?
তখন আমি বলি, আমরা সাংবাদিক আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেইতো আসলাম। পাম্পের তথ্য নিতে। তখন তিনি তথ্য দেয়া যাবে না, বলে গায়ে হাত দিয়ে আমাদের রুম থেকে বের করে দেন। পরে তার অফিসের কয়েকজনকে ডেকে অফিস ভবনের কেচিগেট বন্ধ করে দেন। আর অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন । আর বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন। আমি তখন মুঠোফোনে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানালে তারা আমাদের কেচিগেট খুলে দেন। তাই নিরাপত্তার জন্য থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে জানতে শরীয়তপুরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান মৃদুলকে বারবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক শহিদুজ্জামান খান বলেন, একজন মাদকাশক্ত অফিসার অফিসকক্ষে বসে মাদক সেবক করবে আবার সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করবেন এটা দুঃখজনক। আমার ওই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার এবং সুষ্ট তদন্ত করে বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, সাংবাদিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, সাংবাদিকদের সাথে ঘটনাটির বিষয়ে শুনেছি। ভুক্তভোগি সাংবাদিকদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে।