সোমবার, ৫ই জুন, ২০২৩ ইং, ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
সোমবার, ৫ই জুন, ২০২৩ ইং

অষ্টম শ্রেণির ফুটফুটে এই ছাত্রটিকে হত্যা, ২ জনকে অটক করেছে পুলিশ

অষ্টম শ্রেণির ফুটফুটে এই ছাত্রটিকে হত্যা, ২ জনকে অটক করেছে পুলিশ

শরীয়তপুরের জাজিরার হাজী কালাই মোড়লের কান্দির সালাম মাদবরের বড় ছেলে শাকিল মাদবর(১৫) নামে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে গত ২৫ জুন বিকালে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায়, অবশেষে মুক্তিপণ না পেয়ে শাকিল মাদবরকে হত্যা করে গুম করা হয়, এ বিষয়ে শাকিল মাদবরের পিতা সালাম মাদবর বাদী হয়ে জাজিরা থানা একটি মামলা দায়ের করে। ঐ মামলার আলোকে জেলা পুলিশ ও জাজিরা থানা পুলিশের কর্মতৎপরতায় ৬ আসামীর ২ আসামী গ্রেফতার করা হয়। শাকিল মাদবর স্থানীয় এ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন এন্ড হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে লেখাপড়া করিতো।

জেলা পুলিশ সুপার এস. এম. আশরাফুজ্জামান এক প্রেস ব্রিফিং-এর মাধ্যমে জানান যে, জাজিরা উপজেরার পূর্ব নাওডোবা হাজী কালাই মোড়লের কান্দি গ্রামের সালাম মাদবরের বড় ছেলে শাকিল মাদবর (১৫) স্থানীয় আ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন এন্ড হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে লেখাপড়া করত। গত ২৫ জুন বিকাল সারে তিনটার দিকে শাকিলকে প্রতিবেশী সাকিব ওরফে বাবু ক্রিকেট খেলার কথা বলে ডেকে নেয়। পরে তাজেল মোড়লের মুদি দোকানের সামনে থেকে বাবু শাকিলকে ভ্যান যোগে ছাত্তার মাদবরের ঘাট এলাকায় নিয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যার পরেও শকিল বাড়ীতে না ফেরায় খোঁজাখুজি শুরু করে তার পরিবার। শাকিলকে খুঁজে না পেয়ে তার পরিবার বাবুর কাছে আসল ঘটনা জানতে চাইলে প্রথমে বাবু তালবাহানা করে এবং শাকিল ফিরে আসবে বলেও তার পরিবারকে আশ্বস্ত করে। ঘটনার জটিলতা সৃষ্টি হয় ২৬ জুন সকাল ৯টার সময় যখন শকিলের চাচা শাহাজুল ইসলমের মোবাইল ফোনে মুক্তিপন দাবী করা হয়। মোবাইল ফোনে দাবী করা হয় শাকিলকে অজ্ঞাতস্থানে আটকে রাখা হয়েছে এবং ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে শাকিলকে হত্যা করা হবে। পরে স্থানীয়রা বাবুকে আটক করে পুলিশে দেয়।

এসপি আরও বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বাবু স্বীকার করে পূর্ব পরিকল্পিক ভাবে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আক্তার মাদবরের নেতৃত্বে শাকিলকে অপহরণ করে আটক রাখা হয়। সন্দেহ এড়াতে বাবু নিজ বাড়ি চলে যায়। বাবুর তথ্যমতে পুলিশ ইমরান মোড়লকেও আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান স্বীকার করে আক্তার মাদবর, সজিব মাঝি, মহসিন হাওলাদার, স্বপন সরদারসহ আরও কয়েক জন মিলে বাদীর ছেলে শাকিল মাদবরকে হত্যা করিয়া লাশ জাজিরা থানাধীন মোসলেম ঢালী কান্দির বারেক মৃধা বড়ি সংলগ্ন রেল সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নং পিলারের মাঝামাঝি পূর্বপাশে বালুর নিচে লাশ গুম করে রেখেছে। ২৭ জুন রাত ২টায় হত্যাকারীদের দেখানো মতে সেই মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ নিহত শাকিলের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সাকিব ওরফে বাবু (২০), আক্তার মাদবর (২৬), সজিব মাঝি (২২), ইমরান মোড়ল (২০), মহসিন হাওলাদার (২৫) ও স্বপন সরদারদের (৪৫) আসামী করে নিহতের পিতা জাজিরা থানায় নারী ও শিশু এবং পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করেছে।

প্রেস ব্রিফিং উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অপরাধ) আল মামুন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর হায়দার শাওন, জাজিরা থানা অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম সরকার, পিপিএমসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ প্রমূখ।


error: Content is protected !!