
শরীয়তপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের এক শিক্ষক ছাত্রের কাছে মিষ্টি খেতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক বন্ধ করে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রকে এ নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে শিকার শিক্ষার্থীর দাবী ঘটনার সময়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করা হলে অভিযোগের সত্যতা মিলবে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবী করে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেছেন ভিকটিমের পিতা-মাতা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শরীয়তপুর পৌরসভার কাশাভোগ গ্রামের ব্যবসায়ী আনিছ উদ্দিন মোল্যার পুত্র ও শরীয়তপুর টেকনিক্যাল কলেজের কম্পিউটার ট্রেডের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আব্দুন নূর রাফিত। রাফিত এ বছর শরীয়তপুর টেকনিক্যাল স্কুলের ১০ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। রাফিতের সহপাঠি অনেকেই উপ-বৃত্তি প্রাপ্ত হয়। কম্পিউটার ট্রেডের শিক্ষক রাফি মাহমুদ খান উপ-বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মিষ্টি দাবী করে। উপ-বৃত্তি প্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীরা স্যারকে মিষ্টি খাওয়ায়। রাফিত উপ-বৃত্তি পায়নি বলে স্যারকে মিষ্টি খাওয়ায়নি। তাই রোববার বিকেলে মিষ্টির অজুহাত দিয়ে শ্রেণীকক্ষে রাফিতকে অপমান অপদস্ত করে রাফি স্যার। এক পর্যায়ে রাফি স্যার রাফিতকে অমানবিক নির্যাতন করে। এর পূর্বেও স্যার অনেক ছাত্রকে জুতা পেটা পর্যন্ত করেছে। রাফি স্যারের হাতে পরীক্ষার কিছু নম্বর থাকে তাই শিক্ষর্থীরা স্যারের সকল নির্যাতন মানতে বাধ্য।
রাফিত বলেন, স্যার অকথ্য ভাষায় কথা বলে। আমায় বলে, আরে বাইনচোদ মিষ্টির ডরে স্কুলে আসছ না। তুই কই থাকস পোলাপানেতো কয়। তুই থাকস শরীয়তপুর আর আমি ঘুরি সারাদেশে। তখন আমি বলি “স্যার এটাতো আপনার কাজ”। পরে স্যার আমাকে স্কুল থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। ৪-৫ বার বলার পরেও আমি বাহির হইনি। পরে স্যার এসে আমাকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমি দৌড়ে পালাই। এর মধ্যে স্যার স্কুলের কেচি গেইট আটকে দেয়। পরে অন্যান্য ছাত্রদের দিয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে মারতে মারতে মাটিতে শোয়াইয়া ফেলে।
রাফিতের বাবা আনিছ উদ্দিন মোল্যা বলেন, স্যারের হাতে কিছু নম্বর থাকে। তাই স্যার সকল শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। বাবা-মা-বোন তুলে ছাত্রদের গালিগালাজ করে। সামনে পরীক্ষা তাই কেউ প্রতিবাদ করে না। আজ তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে রাফি স্যার আমার ছেলেকে বেধরক মারপিট করেছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করলে আমার ছেলেকে নির্যাতনের সকল দৃশ্য মিলবে। এর পূর্বেও একাধিক ছাত্রদের স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। অনেক ছাত্রদের জুতাপেটা করেছে ওই স্যার। আমি এর প্রতিবাদ জানাই এবং বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাফি স্যার বলেন, আমি কোন প্রাইভেট পড়াই না। প্রিভিয়াস রেকর্ড দেখলে বুঝা যাবে কোন ছাত্রকে কম নম্বরও দেই না। ওইদিন ক্লাসে মিষ্টি খাওয়া নিয়ে ছাত্রদের সাথে কথা হয়। ওই সময় রাফিত আমাকে একটা অপমান জনক কথা বলে। আমি রাফিতকে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে যেতে বলি। একাধিকবার বলার পরেও রাফিত যায়নি। তাই আমার খুব রাগ হয়। তখন রাফিতকে বের করার সময় ধস্তাধস্তিহয়। এর বেশী কিছুই হয়নি।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. আ. রউফ বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে অবগতও করেনি। আপনাদের সাথেই রাফি স্যারের মুখে বিষয়টি শুনলাম। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।