Monday 30th June 2025
Monday 30th June 2025

মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা দিয়ে এলাকার ১০০ জন দুস্থ ও গরিবের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের স্বর্ণঘোষ গ্রামের নিজ বাড়িতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ক্লাবের সভা কক্ষে শীতার্তদের মাঝে এ কম্বল বিতরণ করেন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন দেশ দিয়ে গেছেন, ভূখন্ড দিয়ে গেছেন, লাল সবুজের পতাকা দিয়ে গেছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধা তার পরিচয় করে দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরছেন। বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামের মধ্য দিয়েই মরতে চাই।
তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৃণমুলকর্মী হিসেবে এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সমাজে যারা শীতার্ত মানুষ তাদের প্রতি আমার দায়িত্ববোধ থাকে সেই দায়িত্ব বোধ থেকে এলাকার মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করলাম। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। সেই হিসেবে সরকার প্রতি মাসে আমাকে ২৫ হাজার টাকা ভাতা দেয়। তিন মাসের টাকা দিয়ে কম্বল কিনে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করলাম।
এলাকাবাসী জানায়, সত্তর বছর বয়সী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার প্রতিবছরই এলাকার দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে থাকেন। পাশাপাশি এলাকার মানুষের বিপদ-আপদ ও অসুখ-বিসুখে সবসময় তাদের পাশে ছুটে যান।
গ্রামবাসীও কোনো সমস্যায় পড়লে তার কাছে ছুটে আসেন। আর্থিকভাবে ততোটা স্বচ্ছল না হলেও নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকার। তবে শরীয়তপুরের একমাত্র যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদী হওয়ায় এবং তার দায়ের করা মামলায় দু’জন রাজাকারের ফাঁসির আদেশ হওয়ায় স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির টার্গেটে রয়েছেন তিনি।
স্বর্ণঘোষ গ্রামের বাসিন্দা হালিমা বেগম কম্বল পেয়ে বেশ খুশি। তিনি বলেন, প্রতি বছর শীতে এই মুক্তিযোদ্ধা এলাকায় কম্বল দেন। এ ছাড়া বিপদ আপদে আমাদের পাশে থাকেন।
একই গ্রামের মিতু রানী দাস ও মঞ্জু রানী দাস আজরেক পত্রিকাকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সামাদ তালুকদারের কাছে কোনো ধর্ম-বর্ণ বিভেদ নেই। সকলের বিপদেই তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি বাংলাদেশের সত্যিকারের বীর সন্তান।
এ সময় এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী আনোয়ার হোসেন খান, মতলেব ফকির, আলী আহম্মদ নক্তীসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আব্দুস সামাদ তালুকদার একজন আদর্শবান স্কুলশিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহন করে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্ত হন।
তিনি মাদার তেরেসা গোল্ড মেডেল, শেরে বাংলা শান্তি পদক, সীমান্ত কালচারাল ফাউন্ডেশন পদক-২০১৫, সীমান্ত কালচারাল ফাউন্ডেশন পদক-২০১৬, ২১ শে সম্মাননা স্মারক পদক, গুনিজন সংবর্ধনা সম্মাননা স্মারক-নিউজবিডিডটকম পদক, সম্মাননা পদক এসএসসি ক্লাব’৯৮-২০১৮ পদকে ভূষিত হয়েছেন। তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর জেলা শাখার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করেছেন তিনি।