Monday 30th June 2025
Monday 30th June 2025

ভেদরগঞ্জে আদালতের রায় উপেক্ষা করে নালিশী জমির গাছ কাঁটার অভিযোগ

ভেদরগঞ্জে আদালতের রায় উপেক্ষা করে নালিশী জমির গাছ কাঁটার অভিযোগ

ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষারে আদালতের রায় উপেক্ষা করে নালিশী জমি থেকে গাছ কেঁটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। গত ১৪ জুন থেকে মহিষার ইউনিয়নের পমমির্জাপুর গ্রামে এই গাছ কেঁটে নেয়ার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে বাদী পুনরায় আদালতের স্মরণাপন্ন হবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার বাদী মঞ্জুর আলম সিকদার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মামলার বাদী মঞ্জুর আলম সিকদার মহিষার ইউনিয়নের পমমির্জাপুর গ্রামের মৃত আ. করিম সিকদারের পুত্র। ৪০ বছর যাবৎ বাদীর মা নালিশী জমির ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে বসত বাড়ি নির্মান, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সৃজন ও পুকুর খনন করে ভোগ দখলে রয়েছে। প্রতি বছর সরকারি খাজনা পরিশোধ করছে। গত বি.আর.এস জরিপে ৮৪ শতাংশ নালিশী জমি থেকে ১২ শতাংশ জমি ভুলক্রমে একই এলাকার মৃত তৈয়ব আলী ফকিরের ছেলে আজগর ফকির, ইউনুছ ফকির ও আজিজ ফকিরদের নামে রেকর্ড হয়। এই বিষয়ে বাদী মঞ্জুর আলম সিকদার ভেদরগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে বাটোয়ারা মামলা নং ১২০/২০১৫ দায়ের করে। প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ভাবে দীর্ঘদিন আদালতে মামলা চলার পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বাদীর পক্ষে রায় ঘোষণা করেন আদালত। আদালতের রায়ে বাদী ৮৪ শতাংশ জমির মালিক বহাল থাকে। আদালতের রায়ের পর বিবাদীগণ ১২ শতাংশ জমি বাদীকে বুঝিয়ে দেয়ার নামে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। বাদী চাঁদার টাকা দিতে রাজী না থাকায় বিবাদীপক্ষ নালিশী জমি থেকে গাছ বিক্রি করে। বাদী পক্ষের বাঁধা উপেক্ষা করে গত ১৪ জুন থেকে নালিশী জমি গাছ কেঁটে নিচ্ছে ব্যবসায়ী জালাল খান, সবুজ ভূইয়া ও মহিষার এলাকার মানিক মৃধা। এ পর্যায়ে বাদী পুনরায় আদালতে মামলা করবে বলে জানিয়েছে।
মামলার বাদী মঞ্জুর আলম সিকদার আরও বলেন, আমাদের ক্রয়কৃত জমি থেকে ১২ শতাংশ জমি ভুলক্রমে বি.আর.এস জরিপে আজগর ফকির গংদের নামে রেকর্ড হয়। সেই থেকে আজগর ফকিররা জমি দখলের চেষ্টা করে। তখন আমি ভেদরগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করি। দীর্ঘদিন চলমান থাকার পর গত বছর আদালত আমার পক্ষে রায় প্রদান করেন। সেই থেকে বিবাদী পক্ষ আমার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছে। চাঁদা না পেয়ে প্রভাব খাটিয়ে নালিশী জমি থেকে ৩ ধাপে প্রায় ৪ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করে দেয় বিবাদীগণ। বর্তমানেও প্রভাব খাটিয়ে নালিশী জমির গাছ বিক্রি করেছে এবং বিবাদী পক্ষ উপস্থিত থেকে তা কেঁটে দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি উকিলের সাথে পরামর্শ করে আদালতে মামলা করব।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় নালিশী জমি থেকে জালাল খান, সবুজ ভূইয়া ও মানিক মৃধা গাছ কেটে নিচ্ছে। তখন তারা জানায়, আজগর ফকিরের কাছ থেকে তারা গাছ ক্রয় করেছে। বাদীর পক্ষ গাছ কাঁটতে বাঁধা দিয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয় তোতা মেম্বারকে জানানোর পরে মেম্বারের অনুমতি নিয়ে বিবাদী আজগর ফকির উপস্থিত থেকে তাদের গাছ কাটতে সহায়তা করেছে।
অভিযুক্ত আজগর ফকির জানায়, ১৯৭০ সালে তারা ২ একর ১৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে। তাদের ক্রয়কৃত ও দখলীয় জমি থেকে সে গাছ বিক্রি করেছে। বাদীর জমি থেকে সে কোন গাছ বিক্রি করেনি বা বাদীর কাছে সে কোন চাঁদা দাবী করেনি। নালিশী জমি নিয়ে বাদীর সাথে দ্বন্দ্ব ছিল তা চেয়ারম্যান হাজী নুরুল ইসলাম, মীর মামুন, নাজিম তালুকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মান্নান বেপারী, স্থানীয় আবুল বাশার চোকদার, শফি রাড়ি, জব্বর রাড়ি উপস্থিত থেকে সমাধান করে দিয়েছে। গণ্যমান্যদের সম্মান রাখতে গিয়ে সে ৬ শতাংশ জমি কম ভোগ করছে। টাকার প্রয়োজন হওয়ায় নিজ দখলীয় জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছে বিবাদী।