Monday 30th June 2025
Monday 30th June 2025

ভেদরগঞ্জে আবারও মারধরের অভিযোগ চেয়ারম্যান শাহজালালের বিরুদ্ধে

ভেদরগঞ্জে আবারও মারধরের অভিযোগ চেয়ারম্যান শাহজালালের বিরুদ্ধে
ভেদরগঞ্জে আবারও মারধরের অভিযোগ চেয়ারম্যান শাহজালালের বিরুদ্ধে

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহাজালাল মাল একই বংশের ইছব আলী মাল (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে আবারও থাপ্পর মারার অভিযোগ উঠেছে। এর পূর্বে গত সোমবার মোশারফ মোল্যা (৬৫) নামে অপর এক ব্যক্তিকে গ্রামপুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে ইউপি ভবনে নিজ হাতে পেটান এই চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের এই বেপরোয়া কার্যক্রমে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন। পূর্বের মারপিটের ঘটনা স্বীকার করলেও এই মারপিটের কথা অস্বীকার করেছেন এই চেয়ারম্যান।

সরেজমিন গিয়ে নির্যাতিত ইছব আলী মোল্যাসহ প্রতক্ষদর্শীদের সাথে আলাপ কালে জানাগেছে, ভেদরগঞ্জ উপজেলার এসি ল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) একটি তদন্তের উদ্দেশ্যে দক্ষিন তারাবুনিয়া ইউনিয়নে যায়। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মাল সহ ইউপি সদস্যগণ, এলাকার কৃষক ও গণ্যমান্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সকলের উপস্থিতিতেই ইছব আলী মালের একটি কথায় উত্তেজিত হয়ে চেয়ারম্যান শাহজালাল মাল তাকে থাপ্পর দেন।

চেয়ারম্যানের নির্যাতনে শিকার ইছব আলী মাল বলেন, যেখানে এসি ল্যান্ড স্যার তদন্ত করছে সেখানে আমারও জমি আছে। এসি ল্যান্ড স্যার জানতে চায় সেখানে খাল ছিল কি না? স্যারের প্রশ্নের জবাবে আমি বলি এই সম্পত্তি আমাদের মালিকানা। সেখানে কোন খাল ছিল না। সেই কারনে চেয়ারম্যান আমাকে থাপ্পর দিয়ে বলে তুই বেশী বুজিস। বিষয়টি আমি এসি ল্যান্ড স্যারকে জানাই। তখন এসি ল্যান্ড স্যারকে চেয়ারম্যান বলে, ‘শুধু থাপ্পর না ওকে মেরে ফেলা দরকার’। বিষয়টি আমি আমাদের এমপি পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমকেও জানিয়েছি।

নির্যাতিতের ছেলে শাহ পরান বলেন, জমি সম্পর্কে আমার বাবা এসি ল্যান্ড স্যারের সাথে কথা বলে। তখন চেয়ারম্যান এসে আমার বাবাকে থাপড়ানো শুরু করে। আর বলে তোকে শুধু থাপড়ানো না মেরে ফেলা উচিত। অফিসার, মেম্বার ও গণ্যমান্য লোকজনের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান আমার বাবাকে মারধর করেছে। এতে আমাদের সম্মান হানি হয়েছে। আমরা নির্যাতনকারী চেয়ারম্যানের বিচার চাই।
নির্যাতিতের নাতি সবুজ বলে, চেয়ারম্যানের সাথে আগে-পড়ে কি হয়েছে তা জানি না। তবে আমাদের উপস্থিতিতেই ইছব মালকে চেয়ারম্যান চর-থাপ্পর মারে।

জহির উদ্দিন মাল বলেন, দক্ষিন তারাবুনিয়ার চেয়ারম্যান শাহজালাল মাল কারনে অকারনে মুরব্বিদের গায়ে হাত তোলে। এটা খুব দুঃখ জনক। আসলে চেয়ারম্যান ক্ষমতার দাপটে এটা ঠিক করছে না।

স্থানিয় মুরব্বি আজি মাল বলেন, চেয়ারম্যান এলাকার একজন প্রেসিডেন্ট। সে মুরব্বিদের গায়ে হাত তোলে। কেউ অন্যায় করলে সমাজের মুরব্বিদের কাছে বিচার দিতে পারে। চেয়ারম্যান সেটা না করে নিজেই হাত তোলে। সে নিজে মুরব্বিদের গায়ে হাত তোলে তা ঠিক করছে না।

ইউপি সদস্য হানিফ শেখ বলেন, আমার সামনেই চেয়ারম্যান ইছব মালকে থাপ্পর দেয়।

চেয়ারম্যান শাহজালাল মাল বলেন, ইছব আমার বংশের হলেও সে বিএনপি করে। যেখানে ঘটনা সেখানে এসি ল্যান্ড সহ অনেক কর্মকর্তারা ছিল। আমি কারো গায়ে হাত তুললে তারা দেখত। তাদের সাথে আলাপ করলে বুঝতে পারবেন আমি কাউকে থাপ্পর দিয়েছি কি না। সামনে নির্বাচন তাই আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য প্রতিপক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি শঙ্কর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, একটা তদন্তে গিয়ে দক্ষিন তারাবুনিয়া এলাকায় দুই ঘন্টা ছিলাম। সেখানে চেয়ারম্যান সহ অনেক মানুষ ছিল। আমার সামনে চেয়ারম্যান কারো গাঁয়ে হাত তোলে নাই। এর আগেপরে কিছু হয়েছে কি না তা আমি দেখি নাই।