
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে আধ্যাতিক শক্তি, ঝাড়ফুক, স্বপ্নে পাওয়া শক্তি ও গাছের ঔষধি ক্ষমতার নামে চলছে চিকিৎসা প্রতারণা। এলাকার সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এমন অভিযোগ উঠেছে ওই গ্রামের রাজ্জাক মোল্যা ও তার স্ত্রী জোসনার বিরুদ্ধে। জানা গেছে তারা ইতোপূর্বে ঢাকার সাভারে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে গণ পিটুনি খেয়ে পালিয়ে আসে। বর্তমানে দালালের মাধ্যমে রোগী জোগার করে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চুক্তিতে সেই রোগীর চিকিৎসার নামে প্রত্যারণা করছেন ওই দম্পতি। তাদের প্রতারণার ফাঁদে ইতোমধ্যে অনেকেই পা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী রোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে জানাগেছে, রাজ্জাক মোল্যা ও তার স্ত্রী জোসনার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই। রাজ্জাক প্রতিবন্দি জোসনাকে বিয়ে করে ঢাকার সাভারে চলে যায়। সেখানে রাজ্জাক দিন মজুরের কাজ করত। বছর দুয়েক পূর্বে রাজ্জাক-জোসনা ও তার সাভারের বাড়িওয়ালা মিলে পরিকল্পিত ভাবে চিকিৎসা ব্যবসা শুরু করে। অনেকদিন ব্যবসা ভালোভাবে চলতে থাকে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের কাছে তাদের প্রতারণা প্রকাশ পায়। মাস দুয়েক পূর্বে গণপিটুনি খেয়ে রাজ্জাম-জোসনা দম্পতি সেখান থেকে পালিয়ে আসে। সেই থেকে গ্রামের বাড়ি ধানকাঠি ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এসে এলাকার সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা শুরু করেছে।
সোমবার সকালে রাজ্জাক-জোসনার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার একটি ঘরের ভেতর কয়েকজন রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছে। রোগীদের সাথে টাকা লেনদেন করছে তারা। রাজ্জাকের বাড়ির চারপাশ পাহাড়া দিচ্ছে রাজ্জাক-জোসনার লালিত দালাল চক্র।
ফকিরের দালাল এনামুল হক সেন্টু মোল্যা বলেন, এই ফকিরের চিকিৎসায় এলাকার অনেক রোগী ভালো হয়। আপনাদের কাছে যে নালিশ করেছে তারা সমাজের মঙ্গল চায় না।
ফকির জোসনা বলে, মেডিকেল থেকে ডাক্তার যে রোগী ফেরত দেয় আমি সেই রোগীদের চুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা করি। আমার চিকিৎসায় অনেক রোগী ভালো হবে। এর আগে আমি ঢাকার সাভারে চিকিৎসা করতাম। একটা কারণে সেখান থেকে চলে এসেছি। ২ মাস যাবৎ এখানে রোগী দেখি। দূর দূরান্ত থেকে আমার কাছে রোগী আসে। আমি স্বপ্নে পাওয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা করি।
সুফিয়া বেগম বলেন, আমি হানিফার চর থেকে এসেছি। ৭ হাজার টাকা চুক্তিতে চিকিৎসা শুরু করছি। এই পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। আমাকে প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুইবার এখানে আসতে হয়। অপর রোগী সিদ্দিক বলে, আমি ব্যথার সমস্যা নিয়ে এসেছি। ৬ হাজার টাকা চুক্তিতে চিকিৎসা শুরু করছি। ৫দিন যাবৎ এই ফকিরের কাছে আসি।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমার মায়ের নাম আয়েশা বেগম। ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে এই ফকিরের মাধ্যমে চিকিৎসা করাই। আমার মায়ের পিথ থলিতে পাথর হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে সে আমার মাকে ভালো করে দিবেন।
এই বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. এসএম আব্দুল্লা আল মুরাদবলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ঝাড়-ফুকের কোন ভিত্তি নাই। এই ধরণের চিকিৎসা যারা করে তার সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।