
টাকা না দেওয়ায় গরম পানি দিয়ে এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে দিয়েছেন তার স্বামী। ওই গৃহবধূর নাম সোনিয়া আক্তার। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এরপর গুরুতর অবস্থায় শনিবার সকাল ৯ টার দিকে সোনিয়া আক্তারকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত সোনিয়া আক্তার (২২) ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের আবুল হোসেন সরদারের স্ত্রী। তার আরিফা সিনহা (১) নামে একটি মেয়ে আছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিছানায় কাতরাচ্ছেন সোনিয়া। শরীরের অর্ধেক অংশ কাপড়ে ঢাকা। পিঠ, হাত, গলাসহ যেটুকু আবরণহীন তার পুরোটাই ঝলসে গেছে।
সোনিয়া আক্তর জানান, তিনি টেংরা এলাকায় চায়ের দোকান করেন। তার স্বামী আবুল হোসেন সরদার (২৬) পেশায় শ্রমিক। শুক্রবার সন্ধ্যায় সোনিয়ার কাছ থেকে ১০০ টাকা দাবি করেন আবুল।
টাকা দিতে অস্বীকার করলে তখন আবুল হোসেন বেশ রেগে যান। পরে গালাগাল শুরু করেন। একপর্যায়ে ছুটে এসে চায়ের দোকান থেকে গরম পানির কেটলি তুলে তার শরীরে ঢেলে দেন।
তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে স্বামীকে যৌতুক দেন। এরপরও বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মারধর করত তাকে।
আহত সোনিয়ার স্বামী আবুল হোসেন সরদার বিষয়টি স্বীকার করে মোবাইল ফোনে বলেন, আমার স্ত্রী সোনিয়ার সঙ্গে টাকা নিয়ে বিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির সময় দোকানের চায়ের কেটলি নিয়ে টানাটানি হলে গরম পানি তার শরীরেও পড়ে, আমার শরীরেও পড়েছে।
আহত সোনিয়ার খালোতো বোন মাকসুদা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, এতে সোনিয়ার শরীরের পঞ্চাশ শতাংশ ঝলসে যায়। তিনি মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় স্বামী তাকে ফেলে রেখে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা সোনিয়াকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আকরাম এলাহী জানান, মেয়েটির শরীরের ১০ শতাংশ চামড়া ঝলসে গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোসাইরহাট সার্কেল মো. মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।