বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

হত্যা মামলায় শরীয়তপুর ১১ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

হত্যা মামলায় শরীয়তপুর ১১ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

শরীয়তপুর জাজিরায় আলোচিত লিটন বেপারী হত্যা মামলার রায় হয়েছে দীর্ঘ এক যুগ পর। রায়ে এগারো জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছে আদালত।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. তারিক এজাজ এই রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের পেশকার মো. আমিনুল ইসলাম হিরণ।

আদালত ও মামলার বাদীর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১০ সালের ৯ মার্চ দুপুর ১২ টার দিকে জাজিরা পৌরসভার ০৭ নং ওয়ার্ডের রাড়ীপাড়া গ্রামের শামছুল মাদবরের বাড়ির সামনে জলিল খা, এসকান্দার মোল্লা, চান মিয়া মাদবর গংরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে লিটন বেপারীকে হত্যা করে। হত্যার শিকার লিটন বেপারী(৩০) রাড়ীপাড়া এলাকার মৃত আবু সিদ্দিক বেপারীর ছেলে। ঘটনার সময় লিটন বেপারীর স্ত্রী সাবানা ৮ মাসের গর্ববতী ছিলেন।

ঘটনার তিন পর লিটন বেপারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬ টার দিকে মারা যান। এই ঘটনায় জাজিরা থানায় বাদী হয়ে ৩৩ জনকে আসামী মামলা দায়ের করেন লিটন বেপারীর ভাই মতিউর রহমান। কিন্তু মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আরও দুইজনকেসহ মোট ৩৫ জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে।

৩৫ জন আসামীর মধ্যে ২২ জনকে খালাস প্রদান করে আদালত এগারোজনকে যাবজ্জীবন ও দুইজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ৬ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামী পালাতক রয়েছেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আটক রয়েছেন মজিবর মাদবর, আওলাদ মাদবর, সুজন মাদবর, মোকাদ্দেস মোল্লা, রবুল্লা মাদবর ও আব্বাস মাদবর। পালাতক আসামীদের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলেন, জলিল খা, এস্কেন্দার মোল্লা, চাঁন মিয়া মাদবর, মকবুল মাদবর ও আল আমিন মাদবর। তিন বছর সাজাপ্রাপ্ত নুরুল আমিন খা আটক থাকলে পালাতক রয়েছে ১ বছর সাজাপ্রাপ্ত মনির মোল্লা।

বাবা লিটন বেপারীর হত্যাকান্ডের সময় মায়ের গর্ভে ছিল রাতুল বেপারী। জন্মের পর বাবাকে না দেখলেও বাবার হত্যাকারীদের দেখতে আদালত প্রাঙ্গণে এসেছে ১৩ বছরের শিশু রাতুল বেপারী(১৩)। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে রাতুল বেপারী বলে, জন্মের পর বাবা ডাকতে পারিনি আমি। বাবাকে ছুঁয়ে দেখতে পারিনি। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের দেখে ঘৃণা জানাতে এসেছি। আদালত বাবার হত্যাকারীদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। কিন্তু আমি উচ্চ আদালতে বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

মামলার বাদী মতিউর রহমান বলেন, যারা আমার ভাইকে দিন দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এই রায়ে প্রাথমিক ভাবে আমি খুশি। উচ্চ আদালতে যেন এই রায় বহাল থাকে সেই দাবী জানাই।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, লিটন বেপারী ঘটনার তিনদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন। আদালতের রায়ে আসামীরা সন্তুষ্ট নন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

রাষ্টপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মির্জা হযরত আলী বলেন, দীর্ঘ ১ যুগ পর আলোচিত লিটন বেপারী হত্যার রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ খুশি। আসামী পক্ষ উচ্চ আদালতে গেলে আমরা জবাব দেব।

 


error: Content is protected !!