শরীয়তপুরের জাজিরায় তিনটি ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচ’শ একর জমি ইপিজেডের জন্য অধিগ্রহণ না করার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। গত বুধবার সেনেরচর ইউনিয়নের মোল্যাকান্দি গ্রামে স্থানীয় বাসিন্দারা এ আন্দলোন কর্মসূচী পালন করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের জাজিরায় একটি ইপিজেড করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। দুই বছর আগে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন থেকে সাড়ে পাঁচ’শ একর জমির উপর ইপিজেড স্থাপনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। উপজেলার সেনেরচর, বড়কান্দি ও পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চারটি মৌজায় ওই সাড়ে পাঁচ’শ একর জমির অবস্থান। মৌজাগুলো হলো সেনেরচর, মানিকনগর, দিয়ারা গোপালপুর ও নাওডোবা।
জেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তাবনা পাঠানোর পর গত মার্চে বাংলাদেশ অর্থনীতি অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) থেকে ওই স্থানে ইপিজেড করার জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। এর পরই বেজা’র প্রতিনিধি দল ও বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন সময় ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ওই এলাকার মানুষ ইপিজেডে জমি না দেয়ার জন্য আন্দলোন শুরু করেন।
বুধবার সকালে জাজিরার সেনেরচর মোল্যাকান্দি গ্রামে পালিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীতে স্থানীয় মোল্যাকান্দি, রজব আলী মুন্সিকান্দি, মঙ্গল খাঁ কান্দি ও চৌকিদার কান্দির বাসিন্দারা অংশ নেন। সেনেরচর মোল্যাকান্দির সড়কের দু’পাশে কয়েক’শ নারী-পুরুষ এ কর্মসূচীতে অংশ নেয়। সকাল ১০টা হতে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ কর্মসূচী চলে।
সেনেরচর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মালেক মোল্যা বলেন, এ এলাকার চারটি মৌজায় দেড় হাজার পরিবারে দশ হাজার মানুষের বাস। যাদের জীবন জীবিকা চলে ওই কৃষি জমিতে ফসল ফলিয়ে। জমি ইপিজেডে নিয়ে গেলে সব মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে। হয়তো ক্ষতিপুরণ পাবে কিন্তু জমিতো আর পাবে না। ফসলি জমি ও বসত বাড়ি হারিয়ে আমারা ইপিজেডে জমি দিতে পারব না।
মোল্যকান্দি গ্রামের সোহেল আকন বলেন, আমরা জমি দিয়ে দিলে বাঁচবো কিভাবে? ক্ষতিপুরনের টাকায়তো আর আশপাশে কোন জমি পাব না। তাহলে আমরা কোথায় যাব? কোন অবস্থাতেই আমরা ইপিজেডে জমি দিতে পারব না।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমান বলেন, জাজিরায় ইপিজেডের জন্য সাড়ে পাঁচ’শ একর জমির প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে এখনো অধিগ্রহণ করার চিঠি পাওয়া যায়নি। আর ওই এলাকার মানুষ জমি দিতে চাননা এমন কথা লিখিত ভাবে কেউ জানায়নি।