
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস উপলক্ষ্যে শরীয়তপুরে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) জেলা আওয়ামীগ কার্যালয়ে জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠণের আয়োজনে এ আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ইকবাল হোসেন অপু।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে-এর সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য ও জজকোর্টের জিপি আলমগীর মুন্সীর সঞ্চালনায় জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন তালুকদার, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাসহ জেলা, উপজেলা, পৌরসভা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠণের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
২০০৭ সালের ১৬ জুলাই আজকের এই দিনে ১/১১-এর অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন মিথ্যা-বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গণতন্ত্রের মানসকন্যা বঙ্গবন্ধু তনয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, সেদিন ভোরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দুই সহস্রাধিক সদস্য সম্পূর্ণ বে-আইনীভাবে শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। সেসময় তিনি ফজরের নামাজ আদায় করেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা শেখ হাসিনাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে সুধা সদন থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং যৌথবাহিনীর সদস্যরা বন্দী অবস্থায় তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে। তৎকালীন অবৈধ ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জামিন আবেদন আইন বহির্ভূতভাবে না মঞ্জুর করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সাহসিকা শেখ হাসিনা আদালতের গেটে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩৬ মিনিটের অগ্নিঝরা বক্তৃতার মাধ্যমে তৎকালীন অবৈধ সরকারের হীন-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন।
গ্রেপ্তার পূর্ব মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠির মাধ্যমে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরকে গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জেগে উঠলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ষড়যন্ত্র মারাত্মক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত প্রতিরোধ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুকন্যার আপোষহীন ও দৃঢ় মনোভাব এবং দেশবাসীর অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ ও নানামুখী ষড়যন্ত্রের পর তৎকালীন অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরায় ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের।
দিবসটি সারাদেশের ন্যায় শরীয়তপুর আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন দিনটি ‘শেখ হাসিনা’র কারাবন্দী দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে।