
শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা। দুপুরের পর থেকেই হাসপাতালে ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগে কুকুর-বিড়ালের অবাধ বিচরণ। অনেক সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও সেবা মিলছে না।
১৯৭২ সালে ৩১শয্যা বিশিষ্ট উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ১৯ শয্যার একটি নতুন তিনতলা আধুনিক ভবন নির্মাণ করে হাসপাতালটি ৫০শয্যায় উন্নতি করা হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও গেল ৯ বছরে সেবার মানে উন্নয়ন ঘটেনি এই হাসপাতালটির। দক্ষ চিকিৎসকের অভাবে ঘরবন্দিভাবে পড়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রাংশ। সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় উপজেলার একমাত্র এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতি বিমুখ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এতে করে চিকিৎসা সেবার মান নিয়েও রয়েছে জনমনে নানা প্রশ্ন। সরকারি হাসপাতালের সেবা নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। ছোট-খাট বিষয় নিয়েও দৌড়াতে হয় ঢাকা পর্যন্ত। হাসপাতালের পরিবেশ এবং অব্যবস্থাপনায় করোনাকালেও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জরুরি সেবা ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতেই যেন স্বস্তি রোগীদের।
মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাবের সংকটকালীন সময়ে উপজেলা ৫০শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হচ্ছে না স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কোন ব্যবস্থা। সামনে একটা হাত ধোয়ার জন্য বেসিন বসিয়ে রাখলেও যত্নের অভাবে তা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে গেছে। হাসপাতালের বারান্দা এবং শয্যাগুলোতে অবাধেই ঘোরাফেরা করছে কুকুর ও বিড়াল। সিঁড়ির কোনায় কোনায় জমে আছে ময়লার স্তূপ।
সরেজমিনে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের নিচ তলায় জরুরি বিভাগ, তত্বাবধায়ক ও আবাসিক চিকিৎসকের অফিস, প্রসূতি বিভাগসহ স্পর্শকাতর সেবা কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রের সামনে রোগী ওয়ার্ডের যাতায়াতের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে কুকুরগুলো ঘুমিয়ে রয়েছে। বিড়ালগুলো ওয়ার্ডের এপাশ থেকে ওপাশ দৌড়চ্ছে, অনেক সময় খাবারে মুখ দিচ্ছে। হাসপাতাল ভবনের ভেতরে বিড়াল-কুকুরের অবাধ বিচরণের কারণে রোগী এবং স্বজনদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীন ভূমিকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা রয়েছেন চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
চিকিৎসা নিতে আসা ইয়ামিন হোসেন দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, তিনদিন ধরে স্ত্রীকে নিয়ে এখানে এসেছি। পকেটে চিকিৎসার জন্য আনা টাকা পয়সা আছে, সঙ্গে রোগীর গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র। হাসপাতালে কোনো নিরাপত্তা রক্ষী নেই, নেই পর্যাপ্ত আলোও। এমন পরিস্থিতিতে ঘুমানোর কথা চিন্তা করি কিভাবে?
রাসেল সরকার নামে আরেক দৈনিক রুদ্রবার্তাকে ব্যক্তি বলেন, এই করোনাকালীন সময় সরকার যখন পুরো দেশবাসীকে সচেতন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে নানামুখী কর্মসূচি নিচ্ছে সেই মুহূর্তে হাসপাতালের ভেতরে কুকুরের অবাধ আনাগোনা কাম্য নয়। কারণ কুকুর জলাতঙ্ক রোগ বহন করে। সেই কুকুরগুলো হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। হাসপাতালটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
রোগী এবং স্বজনদের অসচেতনতাকেই দায়ী করে শরীয়তপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল্লাহ আল মুরাদ দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |