শরীয়তপুর ইসলামী ব্যাংক শাখার সিয়াম, তাকওয়া ও সাদাকাহ এর উপর আলোচনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় শহরের দুবাই প্লাজায় অবস্থিত ২য় তলায় হল রুমে ইসলামী ব্যাংক শরীয়তপুর শাখার আয়োজনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা তাকওয়া ও সাদাকাহ এর উপর আলোচনা করেন।
আলোচনার একপর্যায়ে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের তার বক্তব্যে বলেন, আপনার অনেক সম্পদ আছে আপনি যে লোকো প্রচারের মাধ্যমে দান করছেন, যাকাত দিচ্ছেন। এই যদি হয় উদ্দেশ্য তাহলে এই দান বা যাকাত আপনার কবুল হবেনা।
গরিব অসহায়দের মাঝে শুধুমাত্র অর্থ সম্পদ বিলিয়ে দেয়ার নামই দান নয়, প্রতিটি ভালো কাজই একটি দান। হাদিসে এসেছে, প্রত্যেক সৎকাজই একটি দান। তুমি তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসি মুখে সাক্ষাৎ করবে এবং তোমার ভাইয়ের পানির পাত্রে তোমার বালতি থেকে (পানি) ঢেলে দেবে; এটাও সৎকাজ (সুতরাং এটাও দান)। যে ব্যক্তি অতি গোপনে দান করবে, তার জন্য রয়েছে অনেক বড় নিয়ামাত। গোপনে দানের ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন আল্লাহর ছায়া ব্যতিত কোনো ছায়া থাকবে না, তখন আল্লাহ তাআলা সাত শ্রেণির লোককে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন। (তাদের মধ্যে একজন হলো) যে ব্যক্তি এতো গোপনে সাদকাহ বা দান করে যে, ডান হাত যা দান করে, বাম হাত তা টের পায় না।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহতালার দেয়া পবিত্র কোরআন ও রসুল (স:) এর মাধ্যমে দেয়া যেসব নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ আমারা যদি পালন করি। তা হলে আমাদের সমাজে অন্যায়, অশান্তি, অবিচার, জঙ্গিবাদ কিছুই থাকতে পারেনা। আপনারা যে যেই পেশায় আছেন, যদি তা সঠিক ভাবে পালন করেন। তাহলে সেটা তার জন্য এবাদত হয়ে যাবে। আপনারা যারা ব্যবসা করেন, সেই ব্যবসায়ী যদি পণ্যে ভেজাল না মিশান, ওজনে কম না দেন। ইসলামের নির্দেশ মোতাবেক সঠিক ভাবে যদি আপনার ব্যবসা করেন। তাহলে সেই ব্যবসা আপনার জন্য এবাদত হয়ে যাবে।
রাসুল (স:) ব্যবসা করেছেন। ব্যবসাকে হালাল করেছেন। সুদকে হারাম করেছেন।
অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি ইসলামে নির্দেশ দেয়া আছে। একটি মুসলিম দেশে ইসলাম মুসলিমকে শুধু অমুসলিমদের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতেই বলে না, রাষ্ট্রে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুখ-সমৃদ্ধিও নিশ্চিত করে। পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর একাধিক স্থানে অমুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার তুলে ধরা হয়েছে। অমুসলিমরা নিজ নিজ উপাসনালয়ে উপাসনা করবেন। নিজ ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মালয়কে সুরক্ষিত রাখবেন। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তারা সমান। তাদের প্রতি কোনো প্রকার বৈষম্য ইসলাম বরদাশত করে না। যেসব অমুসলিমের সঙ্গে কোনো সংঘাত নেই, যারা শান্তিপূর্ণভাবে মুসলিমদের সঙ্গে বসবাস করেন তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো নয়; ইনসাফ করতে বলা হয়েছে।
এসময় তিনি আলেম ওলামাদের উদ্যেশে জঙ্গিবাদ ও বাল্যবিবাহ’র কূফল সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করার অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, এভিপি ও শাখা প্রধান ইসালামী ব্যাংক তোফাজ্জেল হোসাইন, আলোচক ইমাম ও খতিব পুলিশ লাইন জামে মসজিদ হাফেজ মাও: কেরামত আলী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জোন প্রধান, বরিশাল জোন আব্দুস সালাম।
উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তানভির আহম্মেদ, নেজারত ডিপুটি কালেক্টর তানভীর আহম্মেদ সোহেল প্রমুখ।