Saturday 28th June 2025
Saturday 28th June 2025

জাজিরায় ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে মির্জা হযরত আলী হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান

জাজিরায় ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে মির্জা হযরত আলী হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান
জাজিরায় ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে মির্জা হযরত আলী হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান

শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলায় অবস্থিত মির্জা হযরত আলী হাই স্কুেলে জম জমাট আয়জনের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী ২৯ও৩০ জানুয়ারি বার্ষিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার ২৯জানুয়ারি সকাল ১০টায় স্কুলটির নিজস্ব ক্যাম্পাসের খেলার মাঠে এ আয়োজন করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট মির্জা হযরত আলী সাইজি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আয়োজনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবলী সুলতানা।

সহকারী শিক্ষক সুরাইয়া জাহান ও শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ লুৎফর রহমান খলিফা, বিদ্যালয় এর দাতা সদস্য এডভোকেট রাশিদা মির্জা, বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল জলিল মাদবর, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস. এম সিরাজুল ইসলাম সরদার, মোহাম্মদ আতাউর রহমান, মোহাম্মদ দলিল উদ্দিন মাদবর ও সাংবাদিক শাহজাদী সুলতানা প্রমুখ।

সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠান শুরুতে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট মিজা হরযত আলী বিরল এক ব্যক্তিত্বের পরিচয় স্থাপন করেন।

তার আচরণ এবং কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, আমার পরম শ্রদ্ধেয় এবং সম্মানিত স্যারদেরকে সম্মানের সাথে স্মরণ করতে চাই। তাই তিনি স্টেজ থেকে নিজের কোলে তুলে নেন তার শিক্ষকদেরকে।

স্যারদেরকে বালতিতে পানি নিয়ে পা ধুয়ে মুছে দেন। এ যেন এক বিরল সম্মাননার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষক মহোদয়গণের সংবর্ধনায় বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সম্মানিত শিক্ষকগণ হলেন, সরকারি জাজিরা মোহর আলী হাইস্কুল প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আমিনুদ্দিন, প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া ও মোহাম্মদ আলী।

প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরি রায় অনুষ্ঠান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে বলেন, এ যেন এক বিরল এবং ব্যতিক্রম ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তিনি শিক্ষকদের কে সম্মান প্রদর্শন করে যেভাবে স্যারদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রকিয়াটা তিনি দেখিয়েছেন
সেটা আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করেছে। এটা আমরা কখনো ভুলবো না। শিক্ষকদেরকে সম্মান না করে কখনো এগিয়ে যাওয়া যায় না এটা যেন আমরা না ভূলি।

ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে সারা জীবন এরকম প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে এবং এর প্রতিযোগিতা যেন সুস্থ প্রতিযোগিতা হয়। তার প্রেক্ষিতেই কিন্তু বিভিন্ন স্কুলে অনুষ্ঠান গুলি করানো হয়। তার শিক্ষা দেওয়ার জন্য। যেন বিজয়ের জন্য চেষ্টা করি জয়ী হওয়ার জন্য চেষ্টা করি এবং বিজয়ী হই কিন্তু গর্বিত হয়েও অহংকারী যেন না হয়ে উঠি। আমরা যারা পরাজয় বরণ করবো তারা যেন ভুল ত্রুটি বুঝে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি ভালো কিছু করার উদ্দেশ্যে। ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারি।সে শিক্ষা যেন আমরা এ প্রতিযোগিতার মধ্য থেকে নেই।

প্রতিষ্ঠাতা ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা হযরত আলী বলেন, সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমাদের মাঝে আমাদের জাজিরা উপজেলার নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) মহোদয় একজন মেধাবী চৌকস ভাল মনের মানুষ আজকের এই অনুষ্ঠানে তার প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করে তার মূল্যবান সময় থেকে আমাদেরকে কিছু সময় দেওয়ার জন্য তাকে আমার এবং আমার প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ এবং অভিবাদন জানাই।

তিনি আরো বলেন, এ অনুষ্ঠানের আকর্ষণীয় বিষয় এবং বিরল এ সংবর্ধনাটি। আমি আজকে স্মরণ করছি আমার বাবাকে ১৯৭৬ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন। চরাঞ্চলের মানুষ আমি। আমার মনে আছে। তিনবার স্কুলে নদীতে ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। ওয়ানে ভর্তি করছে। ভেঙ্গে গেছে আবার ভর্তি করছে ভেঙ্গে গেছে। এভাবে ভাঙ্গাচূরার মধ্যে দিয়ে আমি শিক্ষাজীবন লাভ করেছি। আমার পিতা আজ নেই। আমি স্মরণ করি ২৪ শে আগস্ট আমার বড় ভাই পিতৃত্ব তুল্য। তার অবদান আমার শিক্ষার পিছনে অনেক। তিনিও মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন আমার মা। আজ থেকে ১৫ বছর আগে। আমি তাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং আমি আমার তিন শিক্ষাগুরুর
প্রতি। এটা একদম অন্তরের অনুষ্ঠান এটা কোন লোক দেখানো না। আমি যখন ছাত্র অবস্থায় ছিলাম। সে সময় তাদের পদতলে বসে চর্ম তলে বসে যে শিক্ষা আমি পেয়েছি তার পরবর্তী জীবনে আমি অনেক জায়গায় গেছি। বিশ্বাস করেন আমি অনেক পীরের মাজারে গেছি আমার কাছে বড় পীর কে? শিক্ষক ছাড়া অন্য কাউকে মনে হয়নি।