মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ ইং, ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ই জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে বাঁশের বাঁধ ভেঙ্গে মৎস্য সমিতির প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে

শরীয়তপুরে বাঁশের বাঁধ ভেঙ্গে মৎস্য সমিতির প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে

শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার ঘূর্ণিঝড় আম্পাণ ও কালবৈশাখির তান্ডব ও বন্যার আগাম জোয়ারের পানিতে জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুর হাটে প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বদ্ধ জলমহলটি পানিতে প্লাবিত হওয়ায় মৎস্য ঘের-এর ৩৫ টন ছাড়া মাছ মাছ ভেসে গেছে। দীর্ঘ ৭ মাস লালন পালনের পর ‘নাওডোবা মৎস্য সমিতি’র জলমহলটির দুই কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে আভিযোগ করেছেন সমবায় সমিতির সদস্যরা।

সোমবার ০১ জুন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বদ্ধ জলমহলটির দুই ধারের বাঁশ ও নেট দিয়ে তৈরি বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরেছেন সমিতির লোকজন।

‘নাওডোবা মৎস্য সমিতি’র সভাপতি মজিদ বেপারীর বলেন, যশোর থেকে নভেম্বর মাসে ৩৫ টন মাছ ক্রয় করি। এবং গত ৭ মাস যাবত জলহলটিতে মাছগুলো লালন-পালন করি। বিক্রির উপযুক্ত হওয়ার পরও বর্তমান মহামারি করোনার কারনে মাছ বিক্রি করা সম্ভাব হয়নি। তাই সামনের দিনের আসায় ছিলাম কিন্তু ঘুর্ণিঝড় আম্পান ও কালবৈশাখির প্রবল বাতাস ও হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারনে আমাদের জলমহলটির দুই পাশে থাকা নেট মিশ্রিত বাঁশের বাঁধ ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাওয়ায় প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়। এতে করে নাওডোবা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সদস্যরা এখন দিশেহারা হয়ে ক্ষতিপূরণের আশায় মৎস্য অফিসে ঘুরছেন।

‘নাওডোবা মৎস্য সমিতি’র আরেক সদস্য মোঃ সুমন মোড়ল বলেন, ‘ঘেরে মাছ চাষে ৬৩ লাখ টাকার পোনা ছাড়ার পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাঁশের বাঁধ নির্মাণে সেখানে আরো ১০ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। মাছ বিক্রির সময় হলেও করোনা কারনে বিক্রি করতে পারি নাই, সামনে বিক্রির আসায় ছিলাম তা আর পারলাম না, কালবৈশাখী ও হঠাৎ করে পানি না বাড়লে ঘেরে অন্তত ২ কোটি টাকার অধিক মাছ বিক্রি করা যেত। কিন্তু কালবৈশাখির তান্ডবে বদ্ধ জলমহলটির সব শেষ হয়ে গেছে। বছরের শুরুতেই ঘুর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ও মহামারির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিঃস্ব করে দিয়ে যায়। এ বছর আমাদের বেকার বন্ধু মহল থেকে টাকা ধার করে মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি নামে শরীয়তপুর জেলার রাজস্ব শাখা থেকে প্রতি বছরে আয়কর ভ্যাট সহ ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা হারে সরকারের রাজস্ব শাখায় ইজারা জমা দিতে হয়। কিন্তু যে পরিমাণ ক্ষতি হলো, সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ না পেলে ঘের রেখে পালানো ছাড়া আমাদের উপায় নাই।

এই বিষয় জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, তারা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি, যদি তারা অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করবো।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, তবে তারা আমাদের কাছে এখনো অভিযোগ জানায় নি। তাছাড়া এ বিষয়টি জেলার রাজস্ব শাখা থেকে লিজ নিয়েছে। সেখান থেকে যদি আমাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়, তাহলে আমি তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন জমা দিবো।


error: Content is protected !!