Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকায় চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা

শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকায় চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা

করোনা মহামারীরর কারনে এলাকাগুলোতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। নেই মানুষের মধ্যে আনন্দ, নেই কারো মুখে হাসি। ঘুড়ি উড়ানোর মুহুর্তে তাদের মধ্যে একটু আনন্দ লক্ষ্য করা গেলো। সেই সাথে এই ঘুড়ি উড়ানোর মাঝে মুরব্বিদেরকে পূর্বের ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়েছে। এমনটাই লক্ষ্য করা গেলে শরীয়তপুর জেলা শহরের চরপালং এলাকায়।

শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় সকলের মাঝে ঘুড়ি উৎসব চলছে। বিকেল হলেই ঘুড়ি নিয়ে বাসা-বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরে ছোট-বড় সকলেই। কেউ ঘুড়ি বানিয়ে, কেউ ঘুড়ি নাটাই নিয়ে, কেউ ঘুড়ি উড়িয়ে দিয়ে ও কেউ উড়াতে দেখে অনন্দ পাচ্ছে।

শুরু হয় ঘুড়ি ওড়ানো প্রতিযোগিতা। ছোট বড় সবার অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে মুখরিত হতে থাকে প্রায় এলার পুকুর পার, কৃষি জমির আইলে, বিলের ধারে, নদীর পাড়ে ও খোলার মাঠ সহ বিভিন্ন স্থানে। তবে সকালের তুলনায় বিকেলে দেখা গেছে পরিপূর্ণতা। উৎসবের আনন্দ আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে কিশোরদের ঘুড়ি কাটাকাটি খেলা। বর্তমানে করোনা মহামারীরর কারনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরলে একটু হলেও আনন্দ পায় ঘুড়ি আমোদিরা। এছাড়া রাতে লাল নীল বাতি জ¦ালিয়ে আকাশে ঘুড়ি উড়ালে মনে হয় বিমান উড়ছে আকাশে।

ঘুড়ি সাধারণত কাগজ, সিল্কের কাপড়, পলিথিন ও অন্য কোনো পাতলা জিনিস দিয়ে তৈরি সমদ্বিবাহু আকৃতির আকাশে উড়ানোর একটি খেলনা। এটি অর্ধবৃত্তাকার কাঠামোর উপর তৈরি করা হয় এবং উড়ার সময় যাতে ভারসাম্য থাকে সে জন্য এতে একটি লেজ জুড়ে দেওয়া হয়। ঘুড়ির এক পিঠ সমতল, এর লেজ ভারসাম্য রক্ষা ছাড়াও ঘুড়িকে নিয়ন্ত্রিত এবং স্থিরভাবে উড়তে সহায়তা করে।

শরীয়তপুরে ঘুড়ি গুলোর নাম হলো বাক্স ঘুড়ি, ঝাপ ঘুড়ি, ডাপ্পাস ঘুড়ি, শাপ ঘুড়ি, চিল ঘুড়ি ও প্রজাপতি ঘুড়ি নানান রকমারী সাজের ঘুড়ি উড়ানো হচ্ছে। ঘুড়ি গুলো সাধারণত ১৫ ইঞ্চি থেকে ১২ ফুট সাইজ পর্যন্ত তৈরি করা হয়ে থাকে।

ধারণা করা হয় যে, আলেকজান্ডার উইলসন স্কটল্যান্ডে প্রথম আবহাওয়া বিদ্যা বিষয়ক তথ্য জানতে ঘুড়ি ব্যবহার করেন। ১৭৪৯ সালে তিনি ঘুড়ির সঙ্গে থার্মোমিটার বেঁধে আকাশে উড়িয়ে দেন। ১৭৫২ সালে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বিজলি ও বজ্রপাত বিষয়ক গবেষণার জন্য ঘুড়ি ব্যবহার করেন। ১৮৯৩ সালে লরেন্স হারগ্রেভ নামে একজন অস্ট্রেলিয়ান বক্স ঘুড়ি আবিষ্কার করেন এবং তা আবহাওয়া বিদ্যা ও বায়ুগতি বিদ্যা অধ্যয়নে সফলভাবে ব্যবহার করেন। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল উড়োজাহাজ নির্মাণের সমস্যা পরীক্ষা করতে গিয়ে চতুর্ভুজাকৃতির ঘুড়ি ব্যবহার করেন।

চীন, জাপান ও অন্যান্য পূর্ব এশিয় দেশে ঘুড়ি তৈরি শত শত বছর ধরে জনপ্রিয় এবং ঘুড়ি উড়ানো একটি বিনোদন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা ঘুড়ি উড়ানো উপভোগ করে। বাংলাদেশসহ অনেক এশিয় দেশে শীতকাল এবং গ্রীষ্মকালের শেষভাগে ঘুড়ি উড়ানোর খেলা প্রায় উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিশাল আকৃতির ঘুড়ি এক নাগাড়ে বহুদিন আকাশে উড়তে দেখা যায়।