
সারাবিশ্ব করোনাভাইরাস আতঙ্কে থমকে থাকলেও থেমে নেই পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ। দ্রুতগতিতে গতিতে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। পদ্মা বহুমূখী সেতুতে বসানো হলো ৩১ তম স্প্যান। বুধবার ১০জুন বেলা সাড়ে ৩ টার সময় জাজিরা প্রান্তের ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটির ওপর স্প্যানটি বসানো হলো। এ কারনে মাওয়া নৌ রুটে জাজিরা পয়েন্টে এ ২৫ ও ২৬ নম্বর এই দুইটি খুঁটির মাঝামাঝি শিমুলিয়া কাঠালবাড়ি নৌ-রুটের চ্যানেল ৩১৪০ মেট্রিক টন ওজনের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য স্পেনেটি স্থাপনের নিরাপত্তার স্বার্থে ৮ ঘন্টার জন্য এই নৌরুটে বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই এই নৌরুটে ফেরি-লঞ্চ স্পিডবোট ট্রলার সকল ধরনের যানবাহন বেলা ১১ টা হতে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত চলাচল বন্ধ রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ কে পত্র দিয়েছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।
৩১ তম স্প্যানটি বসানোর ফলে পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার অর্থাৎ সেতুর সাড়ে ৪ কিলোমিটারের উপরে দৃশ্যমান হলো । বাকী থাকবে ১০ টি স্প্যান অর্থাৎ প্রাই সেতুর দেড় কিলোমিটার।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ূন কবীর জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেন দিয়ে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি বহন করে জাজিরা প্রান্তের ২৫ ও ২৬ নম্বর পিলারের কাছে এনে উঠানোর কাজ শুরু করে । সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে স্প্যানটি খুঁটির ওপর ওঠানোর কাজ শুরু করেন পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা। বেলা ৩ টা ৩০ মিনিটের দিকে জাজিরা প্রান্তের ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটির ওপর উঠানো হয় স্প্যানটি।
পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে বসানোর জন্য আরও পাঁচটি স্প্যান প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে দুটিতে রং করার কাজ চলছে। মূল সেতুর কাজ এগিয়েছে ৮৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগামী বছর জুন মাসে সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। প্রশস্ত ১৩ মিটার হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
৪২ টি খুঁটির ওপর মোট ৪১ টি স্প্যান জোড়া দেওয়া সম্পন্ন হলে পদ্মা সেতু পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’ এবং মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড’ মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে।