শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং, ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে স্ত্রীর লাশ ঘরে রেখে স্বামীর পালায়ন!

শরীয়তপুরে স্ত্রীর লাশ ঘরে রেখে স্বামীর পালায়ন!

শরীয়তপুর সদর উপজেলার বাহের চন্দ্রপুর গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে বিথি আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। বিথি আক্তার বাহের চন্দ্রপুর গ্রামের মৃত মইজদ্দিন বেপারীর ছেলে সাহাবুদ্দিন বেপারীর স্ত্রী। শাহাদাৎ নামে তার আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিথির স্বজনরা দাবী করেছেন পরকিয়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্বামী সাহাবুদ্দিন বিথিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু সাহাবুদ্দিন দাবী করেছেন বিথি আত্মহত্যা করেছে।
এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন।
বিথির বড় ভাই ইমরান হাওলাদার বলেন, ভোরে সাহাবুদ্দিন ফোন করে আমাদের জানায় বিথির অবস্থা ভালো না। আপনারা তাড়াতাড়ি চলে আসেন। আমরা এসে দেখি ঘরের খাটের উপর বিথির মরদেহ পড়ে রয়েছে। বিথির কি হয়েছে জানতে চাইলে সাহাবুদ্দিন বলে, বিথি ভোর রাতে বাড়ির পাশের গাছের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আশপাশের কেউ গাছের সাথে মরদেহ ঝুলতে দেখেনি। এর কিছুক্ষন পর সাহাবুদ্দিন বাড়িতে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
ইমরান হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, সাহাবুদ্দিনের সাথে একটি মেয়ের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়। এর জের ধরে সাহাবুদ্দিন বিথিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। আমরা মামলা দায়ের করবো।
এ বিষয়ে সাহাবুদ্দিন বলেন, বিথির সাথে এলাকার একটি ছেলের অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এ ব্যাপারে অনেকবার তাকে নিষেধ করার পরেও সে কথা শোনেনি। এ নিয়ে কথা বলার জন্য রাতে ফোন দিয়ে তার মা, ভাই ও আত্মীয় স্বজনকে আসতে বলি। এরপর রাতের খাবার খেয়ে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। ফজরের আজানের কিছুক্ষন পূর্বে বিথি ঘর থেকে বাহিরে যায়। অনেকক্ষন হয়ে গেলেও বিথি ঘরে ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে বের হই। পরে বাড়ির পাশের জাম গাছের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলতে দেখে দ্রুত তাকে উদ্ধার করি। ততক্ষনে সে মারা যায়। পরে ফোন করে তার পরিবারকে ঘটনা জানাই। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা ভিত্তিহীন। আমি বিথিকে মারিনি। বিথি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে বসত ঘরের খাটের উপর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। এসময় স্বামী সাহাবুদ্দিন ও তার আত্মীয় স্বজনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


error: Content is protected !!