
পদ্মা নদী বেষ্টিত শরীয়তপুর জাজিরা থানা, পদ্মা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। বর্তমান মৌসুম ইলিশ প্রজননের মৌসুম। ইলিশ মাছ বিশ্বে লোভনীয় মাছ হিসেবে খ্যাত। পদ্মা নদী ইলিশ মাছের অভয়আশ্রম। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইলিশ মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লক্ষ লক্ষ টন ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক। বর্তমান মৌসুমে অগণিত মা-ইলিশ পদ্মা নদীতে প্রজননের জন্য আসে। একটা মা-ইলিশ যে পরিমাণ ডিম প্রজনন করে তাতে কয়েক লক্ষ ইলিশ উৎপাদিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মা-ইলিশ রক্ষার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান করেছেন। যে কারণে ৯ অক্টোবর ২০১৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ আহরণ করা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত ২০১৮ সালের এই মৌসুমও ছিল ইলিশ প্রজননের মৌসুম। তখনও রাষ্ট্রীয় নির্দেশে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন রাষ্ট্রীয় আদেশ অমান্য করে বে-আইনিভাবে মাছ ধরা হয়েছে। গত মৌসুমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন ভূমিকা না থাকার কারণে প্রচুর পরিমাণ মা-ইলিশ ধরা হয়। গত মৌসুমের এসময় পদ্মা নদীর অববাহিকা জাজিরা ছিল ইলিশের হাট। পথে, ঘাটে, মাঠে ছিল মা-ইলিশের ছড়া-ছড়ি। যে কারণে ২০১৯ সালে ইলিশের উৎপাদন কমেছে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়েছে। ২০১৮ সালে জননেতা ইকবাল হোসেন অপু স্থানীয় সংসদ সদস্য না হওয়া সত্যেও মা-ইলিশ রক্ষায় অনেক অবদান রেখেছেন। মা-ইলিশ রক্ষার জন্য জাজিরা থানার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এবং জেলেদেরকে অনুরোধ করেছেন কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোন ভূমিকা না থাকার কারণে গত মৌসুমে মা-ইলিশ নিধনের প্রতিযোগিতা হয়েছে। ২০১৯ সালে ইকবাল হোসেন অপু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যেভাবে মা-ইলিশ রক্ষার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন, মনে হয় যেন মা-ইলিশ তার নিজের মা সমতুল্য। ইতিমধ্যে মা ইলিশ রক্ষার জন্য জাজিরার যে সকল ইউনিয়নের জলসীমায় মা-ইলিশ ধরা হয়, সে সকল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, মেম্বার, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সাধারণ মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে আলাপ-আলোচনা করে মা-ইলিশ রক্ষার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ এবং আহ্বান করেন। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন এবং জাজিরা উপজেলা প্রশাসনের সাথে বিভিন্নভাবে আলাপ-আলোচনা করে কীভাবে মা-ইলিশ রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এবং জাজিরা থানার আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে মা-ইলিশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা তৈরী করার জন্য সর্বস্তরের মানুষ এবং জেলেদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। শুধু তাই নয়, মা-ইলিশ রক্ষার জন্য জাজিরা থানা পুলিশ প্রশাসন ও মৎস্য কর্মকর্তাদের সাথে, দলীয় নেতাকর্মী, স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মা-ইলিশ রক্ষার জন্য দিন-রাত পদ্মা নদীতে টলার ও সী-বোট দিয়ে মা-ইলিশ রক্ষার জন্য পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার ফলে বর্তমান মৌসুমে জাজিরা থানার পদ্মা নদীস্থ জলসীমার মধ্যে মাছ ধরা বন্ধ হয়েছে। যে কারণে মা-ইলিশ নিরাপদে ডিম প্রজনন করতে পারবে। এবং ২০২০ সালে অধিক পরিমান ইলিশ উৎপাদিত হবে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতির জন্য সহায়ক হবে। মা-ইলিশ রক্ষায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর যে ভূমিকা এবং অবদান তা প্রশংসার দাবী রাখে। এই জন্য শরীয়তপুর জেলার সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তিনি যে একজন দেশপ্রেমিক এবং দেশকে ভালোবাসেন, মা-ইলিশ রক্ষার পদক্ষেপই তার বহিঃপ্রকাশ। এরপরও জাজিরা থানার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীগণ মা-ইলিশ নিধন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা এবং ষড়যন্ত্র করিতেছেন। তাদের প্রতি অনুরোধ, অন্তত পক্ষে দেশের স্বার্থে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মা-ইলিশ রক্ষার জন্য আপনারাও সহায়তা করুন। আসুন আপনারা আমরা সবাই মিলে মা-ইলিশকে রক্ষা করি। ‘আজকের সঞ্চয়, আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’ একথাটি চিন্তা করে মা-ইলিশকে রক্ষা করি। জাতীয় অর্থনীতিকে সহায়তা করি। সকলের প্রচেষ্টাই একটি ভালো কাজ করা সম্ভব। সকলের সহযোগিতা না থাকলে একটি ভালো কাজ করা দূরহ। আসুন আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশ প্রেমিক হই। তাহলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমনের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে। আজকের প্রজন্ম যদি সবাই মিলে বাংলাদেশকে গড়ে তুলে, তাহলে তার সুফল আগামী প্রজন্ম ভোগ করবে। -এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক, শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ।