Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

শহীদ শেখ রাসেল অধিকার বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক : শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক

শহীদ শেখ রাসেল অধিকার বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক : শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শেখ রাসেলকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় তাদের অপচেষ্টা শতভাগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। শহীদ শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবুদ্ধিবোধ সম্পন্ন মানুষদের কাছে ভালোবাসার নাম। অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জনপদ- লোকালয়ে শেখ রাসেল আজ এক মানবিক সত্তায় পরিণত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১১টায় শরীয়তপুর সদর উপজেলা অডিটরিয়ামে আয়োজিত শহীদ শেখ রাসেলের ৫৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিরতণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা শিশু একাডেমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৫তম জন্মদিন শুক্রবার (১৮ অক্টোবর)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সাথে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর বাড়ি গণহত্যার মঞ্চ হয়ে উঠেছিল। ঘাতকদের নির্মম বুলেট মাত্র দশ বছর বয়সী এই শিশুটির প্রাণও কেড়ে নেয়, স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। কোনো কাকুতি-মিনতি কিংবা নিষ্পাপ মুখশ্রী নিষ্ঠুর দুর্বৃত্তদের মন টলাতে পারেনি। রাসেল মায়ের কাছে যেতে চাইলে ঘাতকদেরই একজন তাকে মায়ের কাছে নিয়ে যায়। রাসেল সেখানে তার মায়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করে বলেছিল, আমি হাসু আপার কাছে যাব। কিন্তু ইতিহাসের ঘৃণিত ঘাতকদের মন এতে গলেনি। ঘাতকদের একজন এই সময় শিশু রাসেলকে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তী সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে জাতি যখন এই নির্মম কাহিনী জানতে পারে তখন কারো পক্ষে চোখের পানি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। কোনো মানুষের পক্ষে এ ধরনের অপকান্ড করা সম্ভব তা যেন সবার কাছে বিশ্বাসেরও অতীত। যে শিশুর চোখের তারায় ছিল অপার সম্ভাবনা, অন্য রকম আলো। বিকশিত হওয়ার আগেই যাকে ঝরে যেতে হলো। সেই রাসেল আমাদের ভালোবাসা, তাকে কখনো ভোলা যায় না। আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে শিশু রাসেলের মৃত্যু হলেও শেখ রাসেল আছে এ দেশের প্রতিটি মানুষের অন্তরে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুর রহমান শেখ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর হায়দার শাওন, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামিনা ইয়াছমিন ও জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সরল বড়–য়া। আলোচনা শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।