Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

শরীয়তপুরে অধিকার ফিরে পেতে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী স্বামীর বাড়িতে

শরীয়তপুরে অধিকার ফিরে পেতে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী স্বামীর বাড়িতে

মামলা মোকদ্দমার সম্মুখিন হয়ে একাধিকবার হাজতবাসের পর প্রায় দুই বছর পূর্বে স্ত্রী পারভীন আক্তারকে তালাক দিয়েছে স্বামী মান্নান মোল্যা। সেই তালাক প্রাপ্তা স্ত্রী স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে ৩০ ডিসেম্বর সোমবার সকাল থেকে পূর্বের স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। এই নিয়ে মান্নানের পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন। কোন উপায়ন্ত না দেখে পরিবারের পক্ষে পালং মডেল থানায় সাধারণ ডাইরী করেছে।
এলাকাবাসী, মান্নানের পরিবার ও মামলার আর্জি থেকে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর পূর্বে শরীয়তপুর সদর উপজেলার পশ্চিম আটপাড়া গ্রামের ধলু মোল্যার ছেলে মান্নান মোল্যার সাথে একই উপজেলার কির্তিনগর গ্রামের আবু মল্লিকের মেয়ে পারভীন আক্তারের সাথে বিয়ে হয়। বিবাহ পরবর্তী ওই দম্পতির সংসারে পারভেজ ও শাওন নামে দুটি সন্তান জন্মগ্রহন করে। প্রায় ৯ বছর সংসার করার পরে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ স্বামী মান্নান মোল্যা স্ত্রী পারভীন আক্তারকে কাজীর মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি তালাক প্রদান করে। বাদীনি তালাকের নোটিশ পেয়ে স্বামী, ভাসুর ও শ্বশুর-শাশুরীকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে। সেই মামলায় দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর স্বামী মান্নান মোল্যার জামিন হয়। চার্জ গঠন পর্যায়ে মামলার কোন ভিত্তি খুজে না পেয়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি খারিজ করেন। ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে বাদিনী পুনরায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস কেসের আবেদন করেও পরাজিত হয়।
বাদীনি পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ নতুন ঘটনা আবিস্কার করে (স্বামী মান্নান কর্তৃক স্ত্রী পারভীনকে তালাক দেয়ার তারিখ ঘটনা দেখিয়ে) পুনরায় আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করে। সেই মামলায়ও স্বামী মান্নান হাজতবাস করেন। এক পর্যায়ে মামলার বিচারকার্য শুরু হয়। গত ২৯ ডিসেম্বর ছিল মামলার রায়ের তারিখ। সেই তারিখে রায়ের আদেশ প্রদান করে নাই আদালত। রায়ে আসামীরা বেকসুর খালাস পেতে পারে আশঙ্কায় ৩০ ডিসেম্বর সকাল থেকে তালাক দেয়া স্বামীকে নিজের স্বামী দাবী করে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। এদিকে মান্নান মোল্যার পরিবার আশঙ্কায় সময় কাটাচ্ছেন যে, ‘আবার যেন কোন নতুন বিপদ তাদের জন্য অপেক্ষা করছে’। এই বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডাইরী করেছেন।
মান্নানের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী পারভীন আক্তার বলেন, আমাকে স্বামীর বাড়িতে থাকার জন্য আদালত বলেছে। তাই সন্তানদের নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসছি। আপনার স্বামীতো আপনাকে তালাক দেয়ার পরে আবার বিয়ে করেছে এর জবাবে পারভীন বলে, একজন স্বামী একাধিক স্ত্রী রাখতে পারে। তাছাড়া আমি তালাকের নোটিশ পাইনি।
মান্নানের পিতা ধলু মোল্যা বলেন, আমার ছেলে সহ আমাদের এই বউ খুব হয়রানী করেছে। আমার ছেলে ওই বউকে তালাক দিয়েছে সে আবার আমাদের বাড়িতে আসছে। এবার যেন কোন বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
মান্নান মোল্যা বলেন, আমি ওই স্ত্রীকে ২ বছর পূর্বে তালাক দিয়েছি। তার দায়ের করা দুইটি মামলায় দুই মেয়াদে অনেক দিন হাজতে ছিলাম। সে আমার বাড়িতে নতুন কোন মতলব নিয়ে এসেছে। আমি তাকে আমার বাড়িতে থাকতে দিলে হয়তো আবার নতুন কোন ষড়যন্ত্র করতে পারে। এই বিষয়ে আমি থানায় সাধারণ ডাইরী করেছি। আমি প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছি।
এই বিষয়ে বাদী পারভীন আক্তারের নিযুক্ত আইনজীবী এ্যাডভোকেট তাইজুল ইসলাম বলেন, আদালত এই ধরনের কোন আদেশ দেয় নাই। যেহেতু এইটা পারিবারিক বিষয় সেহেতু মীমাংসার জন্য বলতে পারে। এর বেশী কিছু না।
পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে একটি সাধারণ ডাইরী করেছেন মান্নানের পরিবার। বিষয়টি তদন্তের জন্য চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।