Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

শরীয়তপুর গৃহহীন পরিবার আবেগে আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত

শরীয়তপুর গৃহহীন পরিবার আবেগে আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত
শরীয়তপুর গৃহহীন পরিবার আবেগে আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত

মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে শরীয়তপুরে ৬৯৯ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেল নির্মিত স্থায়ী বাসভবন। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন উপহার পেয়ে আবেগে আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত হয়েছেন এসব পরিবারের মানুষেরা। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সারাদেশে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব বাড়ি হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনয়নের মীরকান্দী গ্রামের হাবিবুল্লাহ হাওলাদার (৭০) সঙ্গে কথা বললে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, মোর সামান্য জমিতে চল্লিশ বছর ধরি একখান ঘর করিতে হারিনি। তিন ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে বাড়িতে ঠাঁই না পেয়ে চাচা জাবেদ আলী হাওলাদার বাড়িত থাক্কি। এসব কথা বলে আবেগ আপ্লুত হয়ে দুহাত তুলে দোয়া করে বলেন, শেখের বেটি মোগোরে ঘর দিছে আমরা হেরে দোয়া দিমু। বিনামূল্যে ঘর পাইছি, মুই ও মোড় স্ত্রী খুব খুশি।

ঘর পেয়ে উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করে শৌলপাড়া ইউনিয়নের চরচিকন্দী গ্রামের আমজাদ ভূঁইয়া (৬৯) বলেন, অনেকদিন থেকে তিন ছেলে তিন মেয়েকে নিয়ে থাকতে খুব সমস্যায় ছিলাম, মনে মনে একটি ঘর করার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু অভাবে সেটি হয়নি। এখন “শেখ হাসিনা গরীবের দুঃখ বুঝে” সুন্দর একটি ঘর দেওয়ায় মাথা গোজার জাগা পাইছি।

ঘর পেয়ে খুশি চিকন্দী গ্রামের বিধবা জয়গন বিবি (৬৫) বলেন, মুই চিকন্দী বাজারে ঝাড়ু দেই। সামান্য টাহা পাই তা দিয়া দুই ছেলেরে নিয়ে ১৬ বৎসর ধরে অন্যের বাড়িতে থায়ি। বঙ্গবন্ধুর বেটি বিনামূল্যে ঘর দিছে। মুই বঙ্গবন্ধুর কন্যার জন্য মনখুলি আল্লাহর কাছে দোয়া করুম।

জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের আফাজদ্দিন মুন্সীর কান্দি গ্রামের মো. হানিফ মাতুব্বর (৬৮) বলেন, আমার একটি পা নেই। ঘর ও জমি নেই। তিন মেয়ে এক ছেল ও স্ত্রী নিয়ে অন্যের বাড়িতে দিন-রাত কষ্টে থাকতে হতো। আমাদের বাড়ি করার মতো টাকা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে বাড়ি দেবেন কল্পনা করিনি। জমিসহ বাড়ি পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে। আল্লাহ তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করুক ।

শরীয়তপুর জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আজিম উদ্দিন জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক যথাযথভাবে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়। ঘরটি দুই রুম বিশিষ্ট। এসব ঘর মেঝে ও চারদিকের ওয়াল পাকা, সামনে খোলা বারান্দা, ওপরে উন্নত টিনের ছাউনিতে ঘেরা। এর সঙ্গে একসাথেই রান্না ঘর ও পয়ঃনিস্কাশনের স্যানিটারি ল্যাট্রিন রয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই বলেন, সদর উপজেলায় ৫০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেয়েছে ঘর। প্রতিটি ঘরে এক লাখ ৭১ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুরে ৬৯৯ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পাবে। এর মধ্যে আজ ৫০০ পরিবারকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। আর বাকি ১৯৯ পরিবারকে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসব ঘর দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে আর কেউ গৃহহীন থাকবে না। আমি ঘর পাওয়া পরিবারগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি তারা যেন তাদের সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলেন।