
শরীয়তপুর পৌর শহরের পালং স্কুল সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান পারভেজের উপর সন্ত্রাসী হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামী করে পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে সরাসরি জড়িত আসামীরা হলেন, শরীয়তপুর পৌরসভার উত্তর পালং গ্রামের নাজমুল হাসান, নাইমুল হাসান নিলয়, হৃদয় ও রিফাত।
এই ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ৯টা থেকে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করতে শুরু করে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকগণ। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সাংবাদিকরা।
অবস্থান কর্মসূচীর ডাকে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) শরীয়তপুর জেলা শাখা, শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, শরীয়তপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে সাংবাদিকরা অবস্থান করে। এই সময় সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবীতে শ্লোগান তোলা হয়।
সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবীতে বক্তব্য রাখেন, শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অনল কুমার দে, সহ-সভাপতি, মোঃ হাবিবুর রহমান হাবীব, শেখ খলিলুর রহমান, প্রথম আলো প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসফ) শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি ফারুক মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ, শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান খান, সহ-সভাপতি মাহাবুব রহমান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রতিনিধি নুরুল আমিন রবিন, ডিবিসি প্রতিনিধি বিএম ইশ্রাফিল, যমুনা টিভি প্রতিনিধি কাজী মনিরুজ্জামান প্রমূখ।
সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির শুরু থেকেই পালং মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ আক্তার হোসেন সহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে আশ্বস্ত করে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সাংবাদিদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। সাংবাদিকরা তাদের অবস্থানে অনর থাকায় বেলা সারে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার এস.এম. আশরাফুজ্জামান এসে অবস্থানরত সাংবাদিকদের মাঝে বসে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন এবং দ্রুত সময়ে আসামী গ্রেফতারে আশ্বস্ত করে। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ায়।
এই সময় পুলিশ সুপার বলেন, রোকনুজ্জামান পারভেজ আমার সহকর্মী। আমরা একই সাথে মুক্ত কন্ঠে কাজ করতাম। ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম তাই আসামী গ্রেফতারে বিলম্ব হয়েছে। পুলিশের দুইজন অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আসামী গ্রেফতার করে আইনের সোপর্দ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে রোকনুজ্জামান পারভেজ তার পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। তখন ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী মিলে এক নারীকে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করছিল। এক পর্যায়ে পারভেজের দোকানে আশ্রয় নেয় ওই নারী। তখন ওই সন্ত্রাসীরা দোকানে ঢুকেও ওই নারীকে মারধর করে। তখন ওই নারীকে মারধরের দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করলে সন্ত্রাসীরা পারভেজকে রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ক্যামেরা এবং টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। সংবাদ পেয়ে পালং থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।