
পুলিশ বিপুল পরিমাণ লুটের মালামাল উদ্ধার করেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া এলাকা থেকে । মঙ্গলবার ৭ জুন বিকেলে চিতলিয়া ইউনিয়নের মজুমদার কান্দী এলাকার ডোবা, লাকড়ির ঘর, পরিত্যক্ত ঘর ও নদী থেকে মালামাল গুলো উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রীজ, দুটি পাট্রা, চারটি কোদাল, দুইটি ঢালাইর কড়াই, আলনা ও তোষক।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ৩ মে ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৯ টায় ঈদের নামাজ শেষে চিতলিয়া ইউনিয়নের মজুমদ্দার কান্দি গ্রামে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
চিতলিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুস সালাম হাওলাদার এবং সদর থানা আওয়ামীলেীগের সহ-সভাপতি ও আসন্ন চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাস্টার হারুন অর রশিদ হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষ পরবর্তীতে আব্দুস সালাম হাওলাদারের সমর্থক কুদ্দুস বেপারী মারা গেলে তার সমর্থকরা হারুন হাওলাদারের প্রায় অর্ধশত সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। প্রায় সপ্তাহখানেক পর্যন্ত চলে এ লুটপাট। লুটপাটের ঘটনায় হারুন হাওলাদারের সমর্থক জাহাঙ্গীর হাওলাদারের স্ত্রী রেনু বেগম গত ১১ মে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে ১১২ জনকে আসামী করে লুটের মামলা দায়ের করেন। আদালত থেকে মামলটি থানায় পাঠানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী।
এ ঘটনার একমাস পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে মজুমদার কান্দী গ্রামের হেলাল উদ্দিন সরদারের পরিত্যক্ত ঘর থেকে হামেদ চৌকিদারের ছেলে সরোয়ার চৌকিদারের একটি ফ্রিজ ও ইউনুস খাঁর লাকরীর ঘর থেকে দেলোয়ার সরদারের একটি ফ্রীজ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া জয়নাল বেপারীর বাড়ির ডোবা থেকে সিরাজদ্দিন সরদারের ছেলে লিয়াকত সরদারের দুটি পাট্রা, চারটি কোদাল ও দুটি ঢালাইর কড়াই, মালেক বেপারীর ছেলে ইমাম হোসেন বেপারী আলনা ও মান্নান বেপারীর পাকের ঘর থেকে তোষক এবং মুন্সী বাড়ি জামে মসজিদের পাশে নদীর ঘাট থেকে আতাবর সরদারের দোকানের ফ্রীজ উদ্ধার উদ্ধার করে আংগারিয়া ফাঁড়ির পুলিশ। স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে লুটপাটের মালামাল উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
লিয়াকত সরদার বলেন, কুদ্দুস বেপারী মারা গেলে সালাম হাওলাদারের লোকজন হারুন হাওলাদারের সমর্থকদের বাড়িঘরে ব্যপক হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আমার ঢালাই কাজে ব্যবহৃত মিকচার মেশিন সহ প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল লুট হামলাকারীরা। এর মধ্যে অল্প কিছু মালামাল উদ্ধার হয়েছে। বাকি মালামাল এখনো উদ্ধার হয়নি।
সরোয়ার চৌকিদার বলেন, হামলাকারীরা তান্ডব চালিয়ে আমার ঘরের সবকিছু নিয়ে গেছে। এর মধ্যে হেলাল উদ্দিন সরদারের বাড়ি থেকে একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি মালামাল এখনো উদ্ধার হয়নি।
দেলোয়ার সরদার বলেন, সালাম হাওলাদারের লোকজন প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। আমার ঘরের সবকিছু নিয়ে গেছে। এর মধ্যে ইউনুস খাঁর লাকড়ির ঘর থেকে আমার একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে।
আংগারিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে চিতলিয়ার মজুমদার কান্দী এলাকা থেকে লুটপাটের কিছু মালামাল উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, রেনু আক্তারের দায়ের করা লুটের সিআর মামলাটির তদন্ত চলছে। সময়মতো তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হবে।